ক্ষমতায় এসেই কৃষি-শিল্পের পাশাপাশি বাংলার স্বাস্থ্য ও শিক্ষাক্ষেত্রকেও খোলনলচে বদলে ফেলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চান, গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার পরিষেবা পৌঁছে যাক। অপুষ্টিতে যেন কেউ না ভোগে। এবার তাই বাংলার প্রতিটি গ্রামে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ওপর জোর দিতে ১৫ হাজার সঞ্চালককে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। এ জন্য প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েতে একজন সঞ্চালকের অধীনে একটি উপসমিতি তৈরি করা হচ্ছে।
জানা গেছে, পঞ্চায়েতের কোনও নির্বাচিত সদস্যই হবেন সেই সঞ্চালক। সঞ্চালকরা সাম্মানিক হিসেবে ১৫০০ টাকা করে পাবেন। সেই উপসমিতিতে থাকবেন গ্রাম পঞ্চায়েতের চারজন নির্বাচিত সদস্য। কীভাবে নারী ও শিশু কল্যাণ এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিভাগের ওই উপসমিতি কাজ করবে, তার প্রশিক্ষণ দেবে খোদ পঞ্চায়েত দফতরই। ইতিমধ্যে রাজ্যস্তরে ৯২ জন মাস্টার ট্রেনার নিয়োগ হয়ে গিয়েছে। দফতরের কর্তারা তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। এবার এই মাস্টার ট্রেনাররা প্রশিক্ষণ দেবেন সঞ্চালকদের। শুধু তাই নয়, আইসিডিএসের মাধ্যমে সকলের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার জন্য জোরদার প্রশিক্ষণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত লোকসভায় গ্রামের ভোটে প্রভাব পড়েছে। ভবিষ্যতে তা যাতে মেরামত করা যায়, তার জন্য বাড়ি বাড়ি স্বাস্থ্য সহ নানা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর জন্য প্রতিটি পঞ্চায়েতে উপসমিতি তৈরি করে বাড়ি বাড়ি সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয়েছে পঞ্চায়েত দফতর। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ ও কর্মতৎপর করে তুলতে গ্রামস্তর পর্যন্ত প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে তারা। ভোটের আগে কিছু প্রশিক্ষণ হয়েছে। এবার জুন মাসজুড়ে সেই প্রশিক্ষণ চলবে। এর জন্য ইতিমধ্যে ৯৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
জানা গেছে, জেলার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে এই প্রশিক্ষণপর্ব চলবে। এর জন্য প্রতিটি জেলায় আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান, গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তো বটেই, এবার গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিসারদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। গ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়াও পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহ সভাধিপতি সহ সদস্যদের ওই আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। সবমিলিয়ে রাজ্যের ৩২২৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৫৮ হাজার নির্বাচিত সদস্যকে ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রশিক্ষণে যেমন গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য চলা ২৫-২৬টি কর্মসূচী সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করা হবে, তেমনই কম্পিউটার প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে।