একটা সময় এমনই অবস্থা ছিল পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে। একনায়কতন্ত্রে বিশ্বাসী কোনো রাষ্ট্রনেতার বিরুদ্ধে মুখ খুললে রাতারাতি তাঁকে খুঁজে পাওয়া যেত না বা গ্রেফতার করা হত। কিন্তু আজকের দিনে দাঁড়িয়ে এমন ঘটনা বিরল। তবে এমনই ঘটনা ঘটেছে সম্প্রতি। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে এক সাংবাদিক। তবে উপযুক্ত প্রক্রিয়া ছাড়া বেআইনি ভাবে তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে এবার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই ধৃত সাংবাদিক প্রশান্ত কনোজিয়ার স্ত্রী জগীশা অরোরা। সোমবারই মামলার শুনানির জন্য আবেদন করেছিলেন জগীশার আইনজীবী। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, মঙ্গলবার এই আবেদনের শুনানি হবে।
উল্লেখ্য, দিল্লীর বাসিন্দা পেশায় ফ্রিলান্স সাংবাদিক প্রশান্ত কনোজিয়া ফেসবুক এবং টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন। সেই ভিডিওয় দেখা গিয়েছে, এক মহিলা ওই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছেন, তিনি যোগী আদিত্যনাথকে বিয়ে করতে চান। কনোজিয়ার ব্যাপারটাকে ভালো ভাবে নেয়নি উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। ইচ্ছাকৃত ভাবে যোগীর ‘ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ’ করা হচ্ছে, এই মর্মে লখনউয়ের এক থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক পুলিশ অফিসার। তাঁর সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই প্রশান্তকে গ্রেফতার করে দিল্লী পুলিশ। তথ্য আইনের ৬৭ নম্বর ধারায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
একই ঘটনার জন্য একটি বেসরকারি খবরের চ্যানেলের মালিক এবং মুখ্য সম্পাদককেও গ্রেফতার করা হয়েছে। ‘নেশন লাইভ’ নামক ওই চ্যানেলের একটি যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠানে গত ৬ জুন, যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে নাকি ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য করেন ওই মহিলা। পাশাপাশি গোরক্ষপুর থেকে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাংবাদিকদের গ্রেফতার হওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এডিটর্স গিল্ড। ঘটনাটিকে স্বৈরাচারী এবং আইনের অপব্যবহার হিসেবে ব্যাখ্যা করে তারা ধৃত সাংবাদিকদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে। আর জগীশা অরোরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “দু’জন ব্যক্তি সাধারণ পোশাকে পুলিশের পরিচয় দিয়ে আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে গিয়েছে।”