আর কিছুদিন পরেই ৭০–এ পা দেবেন সুনীল গাভাসকর। এখনও একইরকম চনমনে তিনি। অনেকটা বিরাটদের যুগেও নিজের জনপ্রিয়তা ধরে রাখার মতো। গতকাল ওভালে এহেন কিংবদন্তীকেই চরম অবমাননার শিকার হতে হল। এক নাগাড়ে কথা বলে ক্লান্ত গাভাসকরকে কেউ খাওয়ার জল এগিয়ে দিল না।
একটি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শো চলছিল। গাভাসকারের সঙ্গী তখন হরভজন সিং। ওভাল স্টেডিয়ামের প্রধান গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে সামান্য এগোলে সামনের জায়গাটায় সেই অনুষ্ঠান চলছে। নাগাড়ে কথা বলতে বলতে তখন গলা শুকিয়ে গিয়েছে গাভাসকারের। মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে যন্ত্রণা হচ্ছে। অনুষ্ঠানের মাঝে জল চাইতে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষের জবাব এসেছে, ভিতরে গিয়ে প্রেস বক্সে জল খেতে হবে। গাভাসকারের মতো কিংবদন্তিকে এভাবে প্রত্যাখ্যান করা হবে, এমনটা কেউ কল্পনাই করতে পারছেন না! এমন অবস্থায় এক বাঙালি চিত্র সাংবাদিক জলের বোতল বাড়িয়ে দিলেন তাঁর দিকে। সেটা দিয়ে সাময়িকভাবে তৃষ্ণা মেটালেন। তবে ঘটনায় গাভাসকার কতটা ক্ষতবিক্ষত হয়েছেন, সেটা এই মারাঠির চোখে–মুখে ফুটে ওঠা অভিমান, দুঃখে বুঝে নিতে অসুবিধে হচ্ছিল না।
জল চেয়েও পাচ্ছেন না সুনীল গাভাসকর! এই ঘটনা ভারতের কোনও স্টেডিয়ামে হলে তার প্রতিক্রিয়া কতটা মারাত্মক হত, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সামান্য অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড গলায় না থাকায় একবার স্টেডিয়ামের নিরাপত্তারক্ষী আটকে দিয়েছিলেন গাভাসকারকে। তাতেই যে পরিমাণ ঝড় উঠেছিল! নাহ্, গাভাসকার যে ধরনের মানুষ তিনি কিছুই বলেন না। অতীতেও বলেননি। ঠিক তেমনই বললেন না শনিবারের ওভালেও।
হরভজনের সঙ্গে অনুষ্ঠানে গাভাসকরকে বলতে শোনা গেল, ভারত এখানে চ্যাম্পিয়ন হতেই এসেছে। ভারত চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে কিনা সেটার জন্য ১৪ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তবে ভারতীয় দলকে নিয়ে আগ্রহ একইরকম। এদিন, রোহিত, রাহুল গাড়িতে চেপে স্টেডিয়াম থেকে বেরোনোর সময় সেটা বোঝা গেল। আগ্রহটা মূলত ভারতীয়দের মধ্যেই। টিকিটের জন্যও আচমকা হাহাকার শুরু হয়ে গিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ভারতের ম্যাচে টিকিট পাওয়া গিয়েছে। ১২৫ পাউন্ডে। অথচ শনিবার সমস্ত টিকিট উধাও। এদিন স্টেডিয়ামে আসার সময় ওভাল মেট্রো ফাঁকা ছিল। কিন্তু ম্যাচের দিন ছবিটা যে বদলে যাবে, সেটা বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না।