লোকসভা নির্বাচনের ফল বেরোতেই রাজ্যজুড়ে দাপট দেখাতে শুরু করেছে গেরুয়া বাহিনী। শুরু হয়েছে খুনোখুনি। গেরুয়া শিবিরের আশ্রিত দুষ্কৃতীদের তান্ডবে রাজ্য জুড়ে চলছে হিংসার আবহাওয়া। নিমতায় তৃণমূল কর্মী খুনের রেশ কাটতে না কাটতেই আবার হিংসার ছবি উঠেছিল বসিরহাটে। সন্দেশখালির ঘটনার জেরে রবিবার ন্যাজাটে যান তৃণমূলের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল। নিহত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। তাঁদের পাশা থাকার আশ্বাস দেন। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, ক্ষমতা দখলের লোভে আক্রমণাত্মক আচরণ করছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, বসিরহাটে শনিবার কর্মিসভা চলাকালীন, হামলা চালিয়ে তৃণমূলকর্মী কায়ুম মোল্লার মাথায় গুলি করা হয়। এরপর বাইরে টেনে এনে নৃশংস ভাবে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে। তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছেন, সন্দেশখালির ন্যাজাট থানা এলাকার হাটগাছিতে শান্তিপূর্ণ ভাবে তৃণমূলের কর্মিসভা চলছিল। ৪০-৫০ জন কর্মী সেখানে ছিলেন। আচমকা বিজেপির ১০-১২ জন হার্মাদ সেখানে ঢুকে হামলা করে। কায়ুমের মাথায় গুলি করে, নৃশংস ভাবে কোপানো হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান ওই তৃণমূলকর্মী।
তৃণমূলের পোস্টার খোলা নিয়ে অশান্তির সূত্রপাত্। হাটগাছিতে বিজেপির লোকজন তৃণমূলের পোস্টার জোর করে খুলতে গেলে, দু-পক্ষের সংঘর্ষ বেধে যায়। তার জেরেই খুন করা হয়েছে তৃণমূলকর্মী কায়ুম মোল্লাকে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আরও ৫ জন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার রাত থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ন্যাজাট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।
রবিবার সকালে মৃত তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে সন্দেশখালি যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মদন মিত্র-সহ তৃণমূলের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিদল। কায়ুম মোল্লার মায়ের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন তাঁরা। নিহতের মায়ের অভিযোগ, দিলীপ ঘোষ ও সায়ন্তন বসুই ঘটনার জন্য দায়ী। তাঁদের উসকানিতেই খুন করা হয়েছে কায়ুমকে। সন্দেশখালির ঘটনা প্রসঙ্গে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপি রাজ্যে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করছে। মানুষ টের পাচ্ছেন তাঁরা কোন দলকে রাজ্যে নিয়ে এসেছেন।’ নিতাই তারপরই বসিরহাট। একের পর এক জায়গায় এইরকম অত্যাচার চলছে বিজেপির গুন্ডাবাহিনীর। এর আগে তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক দাবি করেন যে গেরুয়া বাহিনীর উস্কানিতে সিপিএমের হার্মাদরা ফের জেগে উঠেছে। তারা এখন বিজেপিতে গিয়ে ভিড়েছে। যারা হামলা চালিয়েছে, তারাও গেরুয়ায় গিয়ে মেশা সিপিএমের হার্মাদ বলেই তাঁর দাবি। শুধু তিনি নন। তাঁর এই কথার পরোক্ষ সমর্থন জানিয়েছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মনিয়ান স্বামী। তিনি আজই টুইট করে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।