দলের জন্মলগ্নের নেতা-কর্মীরা কোথায়? হুগলীর জেলা তৃণমূলের নেতাদের নিয়ে নির্বাচনী ফলাফলের পর্যালোচনা বৈঠকে এভাবেই নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলার সাংসদ, বিধায়ক, সভাধিপতি-সহ পঞ্চায়েতের তিনস্তরের নির্বাচিত প্রতিনিধি, পুর প্রতিনিধি এবং ব্লক পর্যায়ের নেতৃত্বকে এদিন তৃণমূল ভবনে ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের বক্তব্যকেই প্রাধান্য দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের অন্দরে বিজেপির টাকার জোরে চোরাস্রোত তৈরি হয়েছে বলে তাঁর কাছে খবর রয়েছে। দোলাচলে থাকা নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতার সুস্পষ্ট বার্তা, দরজা খোলা আছে, যারা যেতে চান চলে যেতে পারেন।
উন্নয়ন স্বত্বেও ভোটে তার প্রতিফলন না ঘটার নেপথ্যে দলের একাংশের আর্থিক দূর্ণীতিকে দায়ী করে কড়া ভাষায় ধমকেছেন মমতা। সবক শেখাতে প্রয়োজনে পুলিশ প্রশাসনকে দিয়ে শায়েস্তা করার কথাও বলেছেন তৃণমূলনেত্রী। মমতা ফিরহাদ হাকিমকে দায়িত্ব দেন, ব্লকে ব্লকে সভা করে দলের পুরনো, বসে যাওয়া কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে।
বামফ্রন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে ১৯৯৮ সালে তৃণমূল গঠন করেছিলেন মমতা। এদিন খাতা খুলে হুগলীর সেই সময়কার কয়েকজন নেতার নাম করেন তিনি। জানতে পারেন তাঁরা অনুপ্সথিত। তখন দৃশ্যতই ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, ‘পুরনো যেসব কর্মী সিপিএমের বিরুদ্ধে কষ্ট করে লড়াই করেছিল, তাঁদের চাই’।
সিঙ্গুরের খারাপ ফল নিয়েও ক্ষুব্ধ মমতা সাফ বলেন, ‘সিঙ্গুরে এমন নেতা চাই না, যারা সাধারণ মানুষের থেকে টাকা তুলবেন। তেমন হলে প্রশাসনের থেকে আমি খবর নিয়ে গ্রেপ্তার করাবো’।নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে হেরেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তও। কীভাবে এই ফল হল, তপনের কাছে তার ব্যাখ্যা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু তিরষ্কার নয়, পুরষ্কারও জুটেছে। হুগলীতে ভোটের দিন যে তৃণমূল কর্মী বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বচসায় জড়িয়েছিলেন, তাঁকে বুথে ঢুকতে বাঁধা দিয়েছিলেন, ধনেখালির সেই মোক্তার হোসেনকে এদিন তাঁর কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ দশ হাজার টাকা পুরষ্কার দেন মমতা।