আজ থেকে ঠিক চার বছর আগে অ্যাডিলেডে বিশ্বকাপের ম্যাচে ১৫ রানে বাংলাদেশ পরাজিত করেছিল ইংল্যান্ডকে। প্রথম রাউন্ডেই ছিটকে জেতে হয়েছিল ইয়ন মরগ্যানদের। শনিবার ফের বিশ্বকাপের মঞ্চে মুখোমুখি হচ্ছে দু’টি দল। কার্ডিফে এই লড়াইয়ে ইংল্যান্ড কি চার বছর আগে হারের বদলা নিতে পারবে?— এই প্রশ্নই এখন ক্রমাগত ঘুরপাক খাচ্ছে। সংগঠক ইংল্যান্ড এবার অন্যতম ফেভারিট হলেও বিশ্বকাপে দারুণ ফর্মে থাকা মাশরাফি মোর্তাজাদের নিয়ে অনেকেই কিন্তু বাজি ধরতে ছাড়ছেন না।
আজকের ম্যাচে চার বছর আগের বদলা নিতে বাংলাদেশও তৈরি। তারা প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ক্রিকেটবিশ্বকে চমকে দিয়েছিল। কিন্তু, দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেও রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের শেষে দু’উইকেটে তাদের হার মানতে হয়েছে। বাংলাদেশকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে স্বীকার করে নিয়েও প্লাঙ্কেট বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো মোটেই অঘটন নয়। বরং, ২০১০ সালে ব্রিস্টলে ওরা যখন আমাদের হারিয়েছিল, সেটা ছিল বড় অঘটন।’ সেই ম্যাচে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন মাশরাফি মোর্তাজা। তাঁর নেতৃত্বেই এবার বিশ্বকাপে লড়ছে বাংলাদেশ। ওভালে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২৪৫ রানের পুঁজি নিয়েও প্রায় জেতার পরিস্থিতি তৈরি করে ফেলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু, ম্যাচটি শেষপর্যন্ত হাতছাড়া হওয়ায় ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে আফশোস করছিলেন মাশরাফি। কিন্তু তিনি জানিয়েছেন, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে খেলতে নামার আগে মানসিক ও শারীরিকভাবে তাঁর দল যথেষ্ট চাঙ্গা এবং উজ্জীবিত। জানি, ইংল্যান্ড টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট দল এবং খুবই শক্তিশালী। আমাদের সামনে
অন্যদিকে এবারের বিশ্বকাপে জয় দিয়েই শুরু করেছে ইংল্যান্ড। প্রথম ম্যাচেই তারা ১০৪ রানে হারিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কিন্তু, সবাইকে অবাক করে দ্বিতীয় ম্যাচেই পাকিস্তানের কাছে ১৪ রানে হার মেনেছে তারা। পাক ম্যাচে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটারদের মেজাজ হারাতেও দেখা গিয়েছে। অখেলোয়াড়োচিত আচরণের জন্য ওপেনার জ্যাসন রয় এবং ফাস্ট বোলার জোফ্রা আর্চারকে জরিমানাও করা হয়েছে। সেদিন পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে বারবার কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটতেও দেখা গিয়েছে। তাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল গ্যালারিও। ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার ক্রিস ওকসের পরিচিতি শান্ত, শিষ্ট, ভদ্র খেলোয়াড় হিসেবেই। কিন্তু, বাউন্ডারিতে ক্যাচ ধরার পর তাঁকেও দেখা যায় গ্যালারির দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল দিয়ে পাক সমর্থদের চুপ করাতে। শনিবার সোফিয়া গার্ডেন্সেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারে, এমনই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ২০১৬ সালে ঢাকায় ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে ম্যাচের শেষে দু’দলের ক্রিকেটারদের বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ার স্মৃতি থেকেই এই সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছেন অনেকেই।
কিন্তু তবুও চার বছর আগের তুলনায় এই ইংল্যান্ড অনেক বেশি শক্তিশালী ও সঙ্ঘবদ্ধ। বদল হয়েছে কোচেরও। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের ডিরেক্টর অ্যান্ড্রু স্ট্রস তৎকালীন কোচ পিটার মুরেসের বদলে দায়িত্ব আনেন অভিজ্ঞ ট্রেভর বেইলিসকে। এরপরই একদিনের আন্তর্জাতিকে তরতরিয়ে উপরে উঠে এসেছে ইংল্যান্ড।
পাক ম্যাচে হারের পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম এগারোয় থাকতে পারেন ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার লিয়াম প্লাঙ্কেট (৩৪)। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেছেন, ‘পাকিস্তানের মতো ভারত এবং বাংলাদেশও বারবার আউটের আবেদন করে আম্পায়ারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এই ব্যাপারটায় ওরা খুবই সিদ্ধহস্ত। বলতে পারেন, ওদের খেলার ধরন এরকমই। কিন্তু, আমাদেরও উপমহাদেশের বড় বড় টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। আইপিএল এবং বিগ ব্যাশের মতো টুর্নামেন্টে প্রচুর দর্শকের সামনে খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের হয়েছে। তাই, গ্যালারি থেকে দর্শকরা কে কী বললেন, তাতে ক্রিকেটারদের কিছু যায় আসে না।’