আপাতত সবারই চোখ আবহাওয়ার পূর্বাভাসের দিকে। কে না জানে, ক্রিকেটের সঙ্গে বৃষ্টির চিরকালীন শত্রুতা। আকাশ কান্নাকাটি করলেই খেলা বন্ধ। ব্রিস্টলে গতকাল পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ তো ভেস্তেই গেল। ভারতের ক্ষেত্রে যেমন থমকে গেল প্রস্তুতি। ফলে রবিবারের মহাযুদ্ধের আগে নেটই করা হল না টিম ইন্ডিয়ার। সাউদাম্পটনে দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের আগের দিনও নেট করতে পারেননি বিরাটরা। এখানেও তাই। সারাদিনই লন্ডনের আকাশে মেঘের নাচানাচি, সঙ্গে টিপির টিপির করে একনাগাড়ে বৃষ্টি। আজ শনিবারও সারা দিন বৃষ্টির পূর্বাভাস। তবে সুখবর হল, বিবিসি-র পূর্বাভাস বলছে, রবিবার মাঝে মাঝে মেঘলা থাকলেও বৃষ্টির গল্প নেই। কাজেই বিরাট বনাম স্টার্ক কিংবা বুমরা বনাম ওয়ার্নার দেখতে পাওয়া নিয়ে কোনও অনিশ্চয়তা নেই।
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ডুয়েলের আঁচ ওভালের সামনে দাঁড়িয়ে বোঝার উপায় নেই। ফাঁকা মাঠ, মূল গেটে দাঁড়ানো বর্ষাতি পরা নিরাপত্তারক্ষী। মুখে কাঠিন্য। আর পাঁচটা মাঠের মতো চারদিকে বিশ্বকাপের হোর্ডিং আর পোস্টার। কোথাও কোনও ব্যস্ততা নেই ওভালে। শুধু বৃষ্টিস্নাত সকালে বহুজাতিক ও বহুমাত্রিক লন্ডন রুটিন মেনে ছুটে চলেছে কাজে। অথচ কাল রবিবার পড়লে পুরো ওভাল স্টেশন থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত চত্বরটা পুরোপুরি চলে যাবে নীল জার্সির দখলে। বেটিং দুনিয়ার বিচারে বিশ্বকাপের সম্ভাব্য দুই ফাইনালিস্টের ম্যাচটাই কাল দেখতে যাচ্ছে দুনিয়া। ওভালে যে ভারতীয় সমর্থকরা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে থাকবেন, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ইংল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, ভারত থেকেও এই ম্যাচের আগে উড়ে আসছেন বহু সমর্থক।
বৃষ্টির মধ্যে এরকম মহারণের আগে আগে প্রস্তুতি সারতে হলে ইন্ডোর নেটই ভরসা। উপায় নেই দেখে যা এ দিন বেছে নিয়েছিলেন বিরাট-শিখর। সকালে টানা বৃষ্টির মধ্যেও ভারত অধিনায়ক শিখরকে সঙ্গী করে পৌঁছে গিয়েছিলেন ওভালের ইন্ডোর নেটে। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে রান আসেনি দু’জনেরই ব্যাটে এবং বড় ইনিংসের অপেক্ষায় দু’জনেই।
এখম পর্যন্ত বিশ্বকাপের যা ট্রেন্ড, সকালে প্রথম দশ ওভার সামলে দিতে পারলে পরের দিকে ব্যাটিং অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে। পাওয়ার প্লে-র ১০ ওভারে মেরে ৮০ তুলে দিতে গিয়ে চার উইকেট খোয়ানোর চেয়ে ১০ ওভারে ৪৫-১ হওয়া এ বার সুরক্ষিত বিকল্প। তবে কাল বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকলেও টানা প্রায় দু’দিন কভার থাকায় উইকেট শুরুতে তাজা থাকবেই।যে কারণে বাড়তি পেসার নেওয়া নিয়ে ভাবতেই হবে ভারতকে। সামি দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে বাইরে ছিলেন, বুমরার পরে দ্বিতীয় পেসার হিসেবে খেলেছিলেন ভুবনেশ্বর। ওভালে সেই ছক পাল্টে ভুবির বদলে সামি বা একজন স্পিনার কমিয়ে তিন পেসার খেলানো হবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা।
তিন পেসার খেলানোর পক্ষে জোরালো যুক্তি হল, ভারতের মাটিতে কুলদীপ-চাহলকে সামলে গত মার্চেই ৩-২ সিরিজ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। মনোবল তলানিতে থাকা প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ের সঙ্গে অজি ব্যাটিংয়ের তুলনা না করাই ভালো। বরং সামিকে এনে শর্ট বলের মিছিল চালু করাটা অনেক ভালো টোটকা হতে পারে। বিশেষ করে ক্যারিবিয়ান ব্যাটিংয়ের সামনে অজি টপ অর্ডার যে ভাবে ৩৮-৪ হয়ে গিয়েছিল। এই যুক্তি মেনে নিলে কুলদীপ বা চাহলের মধ্যে একজনকে বসতে হবে। আর উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতে না চাইলে এক টিম।
সে যা-ই হোক, পুরো দিনটা জিম সেশনেই কাটাল ভারত। সন্ধেয় গেল ব্রিটেনে ভারতীয় হাই কমিশনারের দেওয়া ডিনারের নিমন্ত্রণ রাখতে। টিম আরও খুশি, কিপারের গ্লাভস বিতর্কে বোর্ডের সমর্থন ধোনির পাশে। সিইও রাহুল জোহরির এই নিয়ে আইসিসি কর্তাদের সঙ্গে কথাও বলার কথা ছিল। কিন্তু রাতে আইসিসি জানিয়ে দিল, এই বিশেষ গ্লাভস পরে ধোনি খেলতে পারবেন না।