এবার মন্ত্রীসভার মধ্যে ‘বিদ্রোহে’র মুখে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যার জেরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পিছু হটতে হল তাঁকে। প্রথমে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আটটি কমিটির মধ্যে দু’টি বাদে সব ক’টি থেকে রাজনাথ সিংহকে বাদ দিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু বিদ্রোহের মুখে পড়ে রাতেই ওই দু’টির পাশাপাশি আরও চারটি কমিটিতে রাজনাথকে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।
গুরুত্বপূর্ণ কমিটিগুলি থেকে রাজনাথ বাদ পড়তেই দলের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। কংগ্রেস প্রশ্ন তোলে, রাজনাথের মতো অভিজ্ঞ মন্ত্রীকে কেন কাজে লাগানো হচ্ছে না? বিজেপি সূত্রের খবর, দিনভর পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে, ঘনিষ্ঠ মহলে রাজনাথ বলেন, এর পরে তাঁর মন্ত্রিসভায় থাকার কোনও অর্থ হয় না। আরএসএস নেতৃত্বের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। দিনভর বিতর্ক আর বিদ্রোহের আঁচ পেয়ে সন্ধের পরে পিছু হটতে হয় মোদীকে। গত এক সপ্তাহ ধরে যিনি অমিতকে সঙ্গে নিয়ে তিনশো পারের ‘দাপট’ দেখাচ্ছেন।
এরপরেই প্রশ্ন উঠেছে, রাজনাথকে বাদ দিয়ে মোদী কমিটি গড়েছিলেন কেন এবং সন্ধে হতে না-হতেই সেই কমিটি নতুন করে সাজাতে হল কেন? কেনই বা অমিতকে সরিয়ে একটি কমিটির দায়িত্ব রাজনাথের হাতেই তুলে দিতে হল? কেনই বা আটটির মধ্যে ছ’টিতেই রাজনাথকে রাখতে বাধ্য হলেন মোদী?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের প্রশ্ন, তিনশোরও বেশি আসন নিয়ে আসা মোদীকে যদি প্রথমেই দলের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের মুখে পড়তে হয়, তা হলে এর পরিণতি কোথায়? বিরোধীরা মনে করছেন, এ তো সবে শুরু। লালকৃষ্ণ আডবাণী, মুরলীমনোহর জোশীর পরে সুষমা-জেটলিকেও কোণঠাসা করে দিয়েছে মোদী-শাহ জুটি। জেটলি চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রীকে বলেছিলেন, অসুস্থতার কারণে ‘কিছু সময়ের’ জন্য তিনি মন্ত্রিসভার কোনও দায়িত্ব নিতে পারবেন না। কিন্তু এখন মন্ত্রিসভায় যাবতীয় আর্থিক বিষয়েও নজরদারি শুরু করেছেন অমিত শাহ, নিজের মন্ত্রকে বাকি সব মন্ত্রীকেও ডেকে পাঠাচ্ছেন। এবং প্রধানমন্ত্রীও যাবতীয় দায়িত্ব তাঁর হাতে সঁপে দিচ্ছেন। আসলে যাবতীয় সিদ্ধান্ত মোদী-শাহই নিচ্ছেন। তা সত্ত্বেও যে কমিটিতে দেশের রাজনৈতিক ও নীতিগত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা, যেটিকে চিরাচরিত ভাবে ‘সুপার ক্যাবিনেট’ বলা হয়— সেখানে প্রথমে রাজনাথকে না রেখে অবশ্যই বার্তা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিদ্রোহের মুখে পড়ে পিছু হটতে বাধ্য হল মোদী সরকার।