বছরে তো একটাই দিন জামাইদের জন্য আর এই একটা দিনে জামাইয়ের পাতে ইলিশ না দিলে চলে! শাশুড়ির এই মনোবাঞ্ছা শ্বশুরেরা পূরণ করবেন না এটাও হয় নাকি? কিন্তু বাঙালি ইলিশ বলতেই চোখ বুজে অনুভব করে পদ্মার ইলিশ। উইথ সর্ষে বাটা আর কাঁচা লঙ্কা। তাই জামাইষষ্ঠীতে বাঙালির পাতে ইলিশ মাস্ট। কিন্তু দুঃখের খবর এবারও জামাইষষ্ঠীতে ভরসা রাখতে হবে গতবারের দেওয়া ভিন দেশের ইলিশের উপরই।
পদ্মার ইলিশ অধরা। সরকারি নির্দেশ মেনে এবছর এখনও সাগরে ধরাই শুরু হয়নি রুপোলি ফসল। তাই আগামীকাল জামাইয়ের পাত ভরাতে শাশুড়ি মায়ের ভরসা সেই মায়ানমারের ইলিশ। তাও হিমঘরে থাকা মাছ। কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ম মেনে ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন মৎস্যজীবীদের উপকূলে ট্রলার নিয়ে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। তাই কোনও বছরই এই সময়টায় মাছ ধরেন না মৎস্যজীবীরা। ফলে ষষ্ঠী যদি ১৫ জুনের পরে হয়, সেক্ষেত্রে টাটকা মাছ জামাইয়ের পাতে পড়ে। কিন্তু এবার ষষ্ঠী বেশ খানিকটা আগে। তাই নতুন ইলিশ ওঠেনি। মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন, ‘এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় মাছের ফলন ভাল নয়। তবে তা বোঝা যাবে সমুদ্রে মৎস্যজীবীরা ইলিশ ধরতে যাওয়ার পর। কিন্তু তারও ও দেরি আছে। জামাইষষ্ঠীর পরে’।
পাইকারি বাজারের এক ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, “ষষ্ঠীর দিন রাজ্যে প্রায় ১০০-১৫০ টন ইলিশের চাহিদা থাকে। কোল্ড স্টোরেজের মাছ বাজারে আনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এবার শনিবার অনেক পরিবারেই নিরামিষ খাওয়া-দাওয়া। সেক্ষেত্রে ওইদিন না হলেও পরদিন অর্থাৎ রবিবারও মাছের চাহিদা থাকবে। প্রতিবারই ষষ্ঠীর বাজারে এই রুপোলি ফসলের চাহিদা চড়ে। এবারও তার অন্যথা হবে না”।
ষষ্ঠীর বাজারে সাইজে বড় ইলিশ মাছের দাম থাকবে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা প্রতি কেজি। তবে শনিবারের বাজারে সেই দাম আরও কিছুটা বাড়তে পারে। আর দিঘা, ডায়মন্ড হারবার বা রায়দিঘির মাছের সাইজ কিছুটা ছোট। ৫০০-৬০০ ওজনের মাছ কিনতে খসবে ৮০০-১০০০ টাকা। বাজারের রকমফেরে দামেরও হেরফের হওয়ার সম্ভাবনা। তাই জামাই আদরে রুপোলি ফসল ঘরে আনতে এবারও কপালের ভাঁজ বড়ই হবে শ্বশুরদের।