ভোট মিটে গেলেও অব্যাহত ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস। তৃণমূল ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় উত্তপ্ত বারাসত। রাতভর পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধ চলেছে সেখানে। পুলিশকে লক্ষ্য ইটবৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। বোমাও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস। নামানো হয় র্যাফ এবং কমব্যাট ফোর্সও। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার রাতে। তৃণমূল কর্মী স্বপন চক্রবর্তীকে বিজেপির কর্মীরা রাত আটটা নাগাদ দ্বীজহরিদাস কলোনির একটি ক্লাবে তুলে নিয়ে যান বলে অভিযোগ। ক্লাবের মধ্যে আটকে রেখেই তাঁকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বারাসত থানার পুলিশ। স্বপন চক্রবর্তীকে উদ্ধার করে ফিরে আসার সময়ই পুলিশকে লক্ষ্য করে শুরু হয় ইটবৃষ্টি। ছোড়া হয় বোমাও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেসময় লাঠিচার্জ করে। তাতে বেশ কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা আহত হন। রাস্তা ফাঁকা করতে টিয়ার গ্যাসের সেলও ফাটানো হয়। আরও পুলিশ এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে। এরপরই পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উত্তেজিত জনতার উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। এর পর পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত ওঠে। পুলিশকে আটকাতে শুরু হয় দেদার বোমাবাজি। রাস্তায় ইট ফেলে তাঁদের বাধা দেন বিজেপি কর্মীরা। তবে রাতভর তাণ্ডবের পর আপাতত বারাসতের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। তবে গোটা এলাকা থমথমে। এলাকায় পুলিশবাহিনী মোতায়েন হয়েছে। তবে এসপি অফিসের নাকের ডগায় দ্বিজহরিদাস কলোনিতে এত বিপুল পরিমাণ বোমা কী ভাবে মজুত ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, স্থানীয় স্বপন চক্রবর্তী নামের ওই ব্যবসায়ীর কাছে মোটা টাকা দাবি করছিল কলোনির কিছু ছেলে। যারা বর্তমানে বিজেপির সমর্থক। টাকা দিতে অস্বীকার করলে স্বপনবাবুকে কলোনির ক্লাবে আটকে রাখা হয়। খবর পেয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে গণ্ডগোল শুরু হয়। সারা রাত ধরে তাণ্ডব চলে। এমনকি ৩৪ নং জাতীয় সড়ক পর্যন্ত ঝামেলা পৌঁছে যায়।
সিপিএম থেকে বিজেপিতে চলে যাওয়া দুষ্কৃতীরাই ঝামেলা বাধায় বলে এ দিন অভিযোগ করেন উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর দাবি, ‘‘আমাদের ছেলেদের বিজেপি তুলে নিয়ে গিয়েছিল কাল রাতে। কোথায় স্পর্ধা পাচ্ছে আমি জানি না। যে এলাকায় ঘটনাটা ঘটেছে, সেই এলাকা আগে সমাজবিরোধী কার্যকলাপের জন্য কুখ্যাত ছিল| সব ছিল সিপিএমের হার্মাদ। সেই হার্মাদগুলোই এখন বিজেপি হয়েছে। তারাই এখন এই সব ঘটাচ্ছে। সিপিএম-কে আমি দোষ দেব না। হার্মাদরা আর তাঁদের নিয়ন্ত্রণে নেই।’’