বিজেপিতে যোগ দেওয়া ‘বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না’ খ্যাত অঞ্জু ঘোষ কি বাংলাদেশি নাগরিক? এই নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর জল্পনা। চর্চা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও।
বিদেশি নাগরিক হলে তিনি কি করে ভারতের কোনও রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে পারেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে। নাগরিকত্ব নিয়ে অভিনেত্রী অঞ্জু ঘোষ নিজে পরিষ্কার করে কিছু না জানানোয় জটিলতা আরও বেড়েছে। এই প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন, নাগরিকত্বের বিষয়ে উত্তর অঞ্জু দেবীই দিতে পারবেন। এদিকে, অঞ্জু নিজে বিষয়টি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তবে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সব কিছুই ভারতে। ভারতেই তাঁর পিতা-মাতা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন৷
কিন্তু এরপরেও বিতর্ক থামছে না। নেটিজেনরা সোশ্যাল মিডিয়ায় উইকিপিডিয়ার তথ্য তুলে ধরে দেখাচ্ছেন, অভিনেত্রীর জন্ম এবং বেড়ে ওঠা ও অভিনয় সবই ছিল অধুনালুপ্ত পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ)৷ আসল নাম অঞ্জলী ঘোষ৷ জন্ম ১৯৫৬ সালের ফরিদপুরে৷
এই তথ্য সামনে আসতেই টনক নড়ে রাজ্য বিজেপির। আসরে নামেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মেদিনীপুরের বিজেপির এই সাংসদ তাঁর ফেসবুকে অঞ্জু ঘোষের ভারতীয় নাগরিকত্বের একটি প্রমাণ তুলে ধরেছেন। যেখানে রয়েছে অভিনেত্রীর কলকাতা পুরসভার বার্থ সার্টিফিকেট। সেই সার্টিফিকেটে অঞ্জু ঘোষের জন্মের সমস্ত তথ্য দেওয়া রয়েছে। কিন্তু তারপরেও জটিলতা কমছে না। দিলীপ ঘোষের দেওয়া সার্টিফিকেটের সঙ্গে উইকিপিডিয়াতে দেওয়া তথ্যে কোনও মিল নেই। উইকিপিডিয়া বলছে অভিনেত্রীর জন্মেছিলেন ১৯৫৬ সালে। কিন্তু কলকাতা পুরসভার বার্থ সার্টিফিকেট মতে অভিনেত্রীর জন্ম ৬৬ সালে। ফলে সবটাই ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে।
প্রসঙ্গত, শুধু জন্মই নয়, অভিনেত্রী অঞ্জু ঘোষের কর্মস্থলও বাংলাদেশ। ১৯৭২ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত একটানা চট্টগ্রামের যাত্রা ও নাটকে অভিনয় করেছিলেন অঞ্জু ঘোষ৷ তৎকালীন বাংলাদেশি অন্যতম মঞ্চ সফল জুটি হিসেবে পরিচিত হন অঞ্জু-পঙ্কজ বৈদ্য। এর পর থেকেই চলচ্চিত্র দুনিয়ায় প্রবেশ তাঁর৷ বাংলাদেশি নায়িকা হিসেবে তিনি দ্রুত প্রচারের আলোয় উঠতে থাকেন তিনি। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের অন্যতম সফল নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে জুটি করে অঞ্জু ঘোষ এলেন সাড়া জাগানো ছবি ‘বেদের মেয়ে জোছনা’-তে৷ ছবির কল্যাণে অঞ্জু ঘোষ পরিচিত হতে থাকেন বাংলা৷ পরে বাংলাদেশ ছেড়ে কলকাতায় দীর্ঘ সময় ধরে থাকছেন৷ মঞ্চে অভিনয় করেছেন৷