মুণ্ডিতমস্তক ঊর্ধ্ববাহু নৃত্যরত চৈতন্যের যে বিগ্রহ বাংলায় প্রতিষ্ঠিত আছে তার প্রথম দর্শন মিলেছিল শান্তিপুরের অদ্বৈতাচার্যের বাড়িতে। শান্তিপুরের আনাচ কানাচে কান পাতলেই তাই শোনা যায় নানা ইতিহাসের ফিসফাস শব্দ। শান্তিপুর শুধু বৈষ্ণব ধর্মের তীর্থই না, সব ধর্মেরই সহাবস্থান ঘটেছে এখানে। ইদের সকালে নতুন আনন্দে মেতে উঠেছে গোটা শান্তিপুর। সেখানে খালি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা নয়, যোগদান করেছেন হিন্দু মানুষেরা।
বুধবার ইদের সকালে শান্তিপুরের তোপখানা মসজিদে এক অন্য মেজাজ। নতুন ভাবে সেজে উঠেছে মসজিদ চত্বর। সকাল থেকে নমাজের জন্য মানুষ ঢল নেমেছে। চতুর্দিকেই উৎসবের আবহ। মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের আমলে তৈরি এই তোপখানা মসজিদ। বয়স আনুমানিক ৪০০ বছর। ইদের দিন তো বটেই নানা মুসলিম পরব যেমন ইদ-উল-ফিতর, ইদ-উদ-জোহা, ফতেয়া-দোয়াজ-দাহাম উপলক্ষ্যেও প্রার্থণার জন্য এই মসজিদে জমায়েত হয় বিপুল।
তোপখানা মসজিদ নিয়ে অনেক জনশ্রুতি রয়েছে। শোনা যায়, মুসলিম শাসকদের সময় এখানে পাঠান সৈন্যদের একটি সেনা ছাউনি ও অস্ত্রাগার ছিল। সেই অস্ত্রাগার থেকেই নাম হয় ‘তোপখানা’। ভাঙা দেওয়াল নিয়েই বছরের পর বছর সকল ধর্মের কাছে সম্প্রীতির বার্তা বহন করছে এই মসজিদ, এমনটাই জানিয়েছেন মসজিদের সম্পাদক কালু শেখ। তাঁর কথায়, ‘‘অতীতে এখানে শুধু মুসলিমদের বাস ছিল। বর্তমানে এই মসজিদ ঘিরে গড়ে উঠেছে হিন্দুদের বসতি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি এই এলাকায়।’’