এবারও এনডিএ জোটের শরিক হয়ে বিজেপির সঙ্গে আসন সমঝোতা করে ভোটে লড়েছেন নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড (জেডিইউ)। কিন্তু ভোটের পরেই সম্পর্কে টানাপোড়েন। এনডিএ-র প্রস্তাবে রাজি না হয়ে সরকার বা মন্ত্রীসভায় যাননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। আর সেই সুযোগই কাজে লাগাতে এ বার উঠে পড়ে লাগল লালুপ্রসাদ যাদবের রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। নীতিশকে ফের মহাগঠবন্ধনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানালেন তাঁরা। যদিও নীতিশ শিবিরের পক্ষ থেকে এখনও এ নিয়ে কোনও সাড়া মেলেনি।
নীতিশ কার্যত মন্ত্রীত্ব প্রত্যাখ্যান করায় বিরোধী শিবিরের মহাগঠবন্ধনের শরিক লালুপ্রসাদের আরজেডি, জিতনরাম মাঝির হিন্দুস্তান আওয়াম মোর্চা (হাম) এবং কংগ্রেস ধরেই নিয়েছে, এনডিএ নেতৃত্বের উপর ক্ষুব্ধ এবং হতাশ হয়েছেন নীতিশ। তাই মঙ্গলবার আরজেডির সহ সভাপতি রঘুবংশপ্রসাদ সিংহ সাংবাদিকদের সামনে বলেন, ‘‘এ বার সময় হয়েছে মহাজোটে ফেরার। না হলে নীতিশকে শুধু ‘অপদস্থ’ এবং অপমানই করবে বিজেপি।’’
রঘুবংশপ্রসাদ লালুপ্রসাদ যাদবের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত আরজেডি শিবিরে। তাই মনে করা হচ্ছে লালুর ইঙ্গিতেই নীতিশকে প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। তবে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, এনডিএ এখন সাফল্যের শিখরে। অন্য দিকে বিরোধী শিবিরের হাতে কার্যত কিছুই নেই। এই পরিস্থিতিতে এনডিএ ছেড়ে বিরোধী শিবিরে যাওয়ার মতো বোকামি নীতিশ করবেন না।
আগের বারের চেয়েও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে মোদী সরকারের প্রত্যাবর্তনের পর বিজেপির সূত্র ছিল, শরিক দলের প্রতিটি দলের জন্য ১ জন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিন্তু নীতিশের দাবি ছিল, মুড়ি-মুড়কির এক দর নয় – বরং আনুপাতিক হারে মন্ত্রীত্ব দেওয়া হোক। সূত্রের খবর, নীতিশ ২ জন মন্ত্রীর দাবি করেছিলেন। কিন্তু বিজেপি তাঁর দাবি না মানায় শেষ পর্যন্ত সরকার ও মন্ত্রীসভা দুটিই বয়কট করে জেডিইউ। যদিও তারপরে এনডিএ-বিরোধী কোনও ইঙ্গিতও করেননি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।
২০১৭ সালে মহাজোট ছেড়ে এনডিএ-তে শামিল হন নীতিশ কুমার। এ বার বিহারে জেডিইউ, বিজেপি এবং এলজেপি অর্থাৎ এনডিএ জোট ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। তাই রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছিল, এ বার নীতিশের দলকে অন্তত ২ টি দফতর দেবে বিজেপি। কিন্তু আদতে তা হয়নি। ফলে নীতিশের ক্ষোভের রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে ময়দানে নেমে পড়েছে বিরোধী শিবিরের জোটপক্ষ।