আধুনিক গবেষণা বলছে, মিউজিক থেরাপিতে দ্রুত উন্নতি হয় স্নায়ুরোগে আক্রান্তের। তবে রোগীকে নিছক গান শোনানো নয়, বরং রোগী নিজেই যন্ত্রী এখানে। এর সাফল্যের হার বর্তমানে তুমুল।
উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, ঘাড়ের হাড় ভেঙে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে এসএসকেএমে ভর্তি ভবানীপুরের অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। হুইলচেয়ার তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী। হাতও তেমন নড়ে না। বছর সাতাশের সেই তরুণই বৃহস্পতিবার দুপুরে বেহালা বাজাচ্ছিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে। বাদ্যযন্ত্র হাতে উঠতেই ম্যাজিকের মতো তাঁর আঙুল ধীরে হলেও খেলা করতে শুরু করেছে। আবার মাথায় আঘাতে পক্ষাঘাতের কবলে বর্ধমানের সৌমেন্দু রুদ্রেরও বাঁ দিকের হাত-পায়ে সাড় নেই। বছর ছাব্বিশের এই তরুণও পারকাশনের তালে তাল মিলিয়ে ড্রাম বাজাচ্ছিলেন। চার বছর টানা ফিজিয়োথেরাপিতে যা উন্নতি হয়েছিল, তার তুলনায় ঢের দ্রুত উন্নতি হয়েছে গত তিন সপ্তাহ বাজনা বাজিয়ে।
এমনই এই মিউজিক থেরাপির জাদু। ইউরোপে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা সেই ‘অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপি’র প্রয়োগ শুরু হয়েছে কলকাতাতেও। প্রতি বৃহস্পতিবার এসএসকেএমের নিউরো-রিহ্যাব ক্লিনিকের রোগীদের জন্য এই মিউজিক থেরাপি সেশনের আয়োজন হচ্ছে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ বিমানকান্তি রায়, মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সুজিত সরখেল ও ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ রাজেশ প্রামাণিক পরিচালিত ক্লিনিকে এখন হাজির থাকছেন প্রকৃতি দত্তের মতো পেশাদার মিউজিক থেরাপিস্টও। হাত-পায়ের হাড় ভাঙা রোগীর অপারেশনও হয় অ্যানাস্থেশিয়ার বদলে স্রেফ মিউজিক থেরাপি করে। কিন্তু অ্যাক্টিভ মিউজিক থেরাপি একেবারেই নতুন এই শহরে, এমনই দাবি চিকিৎসকদের।