রাজনীতির মঞ্চে সব কিছুই ইস্যু হতে পারে। সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে উঠে এসেছে এমন সব ইস্যু তা মানুষকে ভাবিয়েছে। ভোট বাক্সেও তার প্রতিফলন পড়েছে। চলেছে ‘সেনা’ নিয়েও রাজনীতি। আর নির্বাচন মিটে গেলেও তা থেমে নেই। বিজেপি দিল্লীর মসনদে এসে এক অদ্ভুত সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করে। বাংলা থেকে মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হবে ‘শহীদ’ বিজেপি সমর্থকদের পরিবারদের। আর তার তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী ৭০ জনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দিল্লীতে।
তবে এখানেই উঠেছে এক গুরুতর প্রশ্ন। এই ৭০ জনের মধ্যে কি সবাই ‘শহীদ’ পরিবারের লোক? কয়েকটি পরিসংখ্যান থেকেই তা বোঝা যাবে। পুরুলিয়ার বলরামপুরের মৃত বিজেপি কর্মী জগন্নাথ টুডুর পরিবারও ছিল এই ৭০ জনের মধ্যে। আর এই জগন্নাথ টুডু মারা গেছিলেন পথ-দুর্ঘটনায়। প্রশ্ন এখানেই এই মৃত্যুকেও কি শহীদের মৃত্যু বলা যায়? তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সহ-সভাপতি রথীন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, ‘ ওই ব্যক্তি পথ-দুর্ঘটনায় মারা যান। দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া ব্যক্তিকে নিয়ে ওরা নোংরা রাজনীতি করছে। আর যত গুলো ঘটনা ঘটেছে, প্রতিটি ঘটনাই তাঁদের নিজেদের দলের ঝামেলা ছাড়া কিছুই নয়।’ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বাইক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় জগন্নাথের।
ঝাড়গ্রাম থেকে মৃত বিজেপি কর্মীদের ৩টি পরিবারের সদস্যদের দিল্লী নিয়ে যাওয়া নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বেলিয়াবেড়া তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি কালিপদ শূরের অভিযোগ, ‘অহেতুক রাজনীতি করা হচ্ছে এঁদের মৃত্যু নিয়ে। গ্রামের প্রতিবেশীদের সঙ্গে গন্ডগোলে দিগার জখম হন। পরে হাসপাতালে মারা যান। আর ভামাল গ্রামের রামপদ বেরা পারিবারিক কলহের জেরে খুন হয়েছেন।’ প্রসঙ্গত, মাতাল দিগার, রামপদ বেরা, রমেন সিংয়ের পরিবারের সদস্যরাও এই ‘শহীদ’ মিছিলে অংশগ্রহণ করে দিল্লী যাত্রা করেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ি ও গোয়ালতোরের নিহত ৩ পরিবারের সদস্যদের কাছেও দিল্লীর আমন্ত্রণ আসে। তবে তা নিয়ে তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘বিজেপি কর্মীদের মৃত্যুর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। মানুষ সব জানেন। সত্য একদিন প্রকাশ্যে আসবে।’