সাল ২০১৭। তারিখ ২৪ এপ্রিল। নকশালবাড়ির দক্ষিণ কোটিয়াজোতের ভীষণ গরিব আদিবাসী রাজু মাহালির বাড়িতে অমিত শাহের পদার্পণে দেশ জুড়ে আলোচনা হয়েছিল। অমিতকে খাওয়াতে কম ঝঞ্ঝাট পোহাতে হয়নি রাজুকে। কিন্তু ওই আলোচনাটুকুই সার, হাল ফেরেনি রাজুর পরিবারের। বরং আরও খারাপ হয়েছে হাল। তখন বিজেপি ঘনিষ্ঠ ছিল মাহালি পরিবার এখন ততটাই বিজেপি বীতশ্রদ্ধ তাঁরা।
লোকসভায় বিজেপির দারুণ ফলাফলের পরে দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠানে অনেকে ডাক পেলেও রাজু আর তাঁর স্ত্রী মাহালিকে ভুলেই গিয়েছে বিজেপি। ক্ষুব্ধ গীতা জানালেন, “ আমাদের ভুলেই গিয়েছে বিজেপি”। রাজুও বীতশ্রদ্ধ হয়েছেন বিজেপির ওপরে।
দেড় কাঠা জমির উপর বাঁশের বেড়ার ঘর আর মাথার উপরে টিনের ছাউনি। অমিত শাহের দক্ষিণ কোটিয়া জোতে পদার্পণের আগে এই ছিল মাহালি পরিবার। স্বামী-স্ত্রী, দু’জনেই দিনমজুর। চা বাগান অধ্যুষিত নকশালবাড়িতে এমন আদিবাসী পরিবার কয়েক হাজার। তার মধ্যে রাতারাতি ‘সেলিব্রিটি’ হয়ে গিয়েছিলেন রাজুরা। কেননা, বিজেপি সভাপতি মাহালি পরিবারে দুপুরের অন্নগ্রহণ করেছেন। আদিবাসী পরিবারটি ভেবেছিল, এ বার বোধহয় দুঃখের দিন তাঁদের ঘুচল। কিন্তু এমন স্বপ্ন দেখা যে কত বড় ভুল, সেটা কয়েকদিনেই টের পেয়েছিলেন তাঁরা। আর ঘুরেও তাকায়নি বিজেপি।
উপকার নিয়ে মানুষকে ভুলে যাওয়ার রোগ বিজেপির নতুন নয়। এর আগেও প্রচারে চমক দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদীর উজ্জ্বলা যোজনাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী সম্বিত পাত্র। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, সমস্ত দরিদ্র পরিবারে গ্যাস সংযোগ পৌছে দিয়েছে তাঁর সরকার। কিন্তু প্রচারে বেরিয়ে এক দরিদ্র পরিবারের সঙ্গে বসে মধ্যাহ্নভোজনের ভিডিও পোস্ট করেন সম্বিত। সেখানে দেখা যাচ্ছে ওই পরিবার উনুনে রান্না করছেন। এই থেকেই শুরু হয় বিতর্ক। এমন ছবি প্রকাশ্যে আসতে বেকায়দায় পড়েছিল বিজেপি।