২৩ মে ফল প্রকাশের পর থেকেই আরও আগ্রাসী হয়ে উঠেছে গেরুয়া শিবির। দিকে দিকে চলছে বাঙালিদের ওপরে নজিরবিহীন আক্রমণ। চলছে বাংলাকে গুজরাট বানানোর চেষ্টা। ব্যারাকপুর মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় যেমন বাঙালিরা ঘরছাড়া। বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই দাবি করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। রাজ্যে নির্বাচনী সাফল্য পেতেই নানা জায়গায় বিজেপি অশান্তি পাকাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। প্রসঙ্গত, এই গোলমালের নেপথ্যে রয়েছে বিজেপি আশ্রিত ‘বহিরাগত’ দুষ্কৃতীরা। এর ফলেই উত্তর ২৪ পরগনার একাংশে বাঙালিরা ঘরছাড়া। এই কারণেই ফিরহাদ হাকিম শঙ্কিত।
তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে গোটা রাজ্যে বাঙালি বিতাড়নের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। উল্লেখ্য, নির্বাচন পর্বে বাংলার বাইরে থেকে নেতা আমদানি করার অভিযোগে সরব হয়েছিল তৃণমূল। বাংলার কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সঙ্গে যাঁদের পরিচয় নেই, তাঁরাই বাংলার রাজনীতিকে কলুষিত করতে চাইছে। অর্থাৎ গেরুয়া বাহিনীকে অবাঙালির দল বলেই বরাবর কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। ভিনরাজ্যের নেতারা এসে বাংলাকে অপমান করছেন বলেও অভিযোগ করেছে তৃণমূল। তাদের আরও অভিযোগ, লোকসভা নির্বাচনে ব্যারাকপুরে বিজেপি জেতার পর থেকেই বিহার, ঝাড়খণ্ডের দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব শুরু হয়েছে। এমনকী গতকাল উপদ্রুত এলাকায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বাইরে থেকে আসা দুষ্কৃতীদের নিশানা করেছেন।
ফিরহাদের মতে, বাংলায় আজ বাঙালিরা বিপন্ন। তাই ঝাড়খণ্ড ও বিহারের বাহিনীর তাণ্ডবে নৈহাটি, হালিশহর, ভাটপাড়া, কাঁচরাপাড়া, কাঁকিনাড়া অঞ্চলের বাঙালিরা ঘরছাড়া। কলকাতার মেয়রের প্রশ্ন, এ কোন বাংলা তৈরি হচ্ছে, যেখানে নজরুলকে ভুলে যাচ্ছি? এটা আবার সারা বাংলায় ছড়িয়ে পড়বে না তো? তখন আমরা বাঙালিরা বাংলা ছেড়ে যাব কোথায়? যদিও সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বক্তব্যে একবারের জন্য সরাসরি বিজেপির নাম নেননি ফিরহাদ হাকিম। তবে, ভিনরাজ্যের রাজনৈতিক আগ্রাসনের সঙ্গে গেরুয়া বাহিনীর উত্থানের যে আশঙ্কা দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূল করে আসছিল, তারই রেশ রয়েছে মন্ত্রীর পোস্টে।
উল্লেখ্য, নির্বাচনী প্রচারের সময় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের রোড শো’কে কেন্দ্র করে যেভাবে বিদ্যাসাগরের মূর্তি তাঁরই নামাঙ্কিত কলেজে ঢুকে ভাঙা হয়েছে, তা বস্তুত রাজ্যের তো বটেই, বিশ্বের বাঙালি ভাবাবেগকেই আঘাত করেছে। সেই ঘটনায় দলমত নির্বিশেষে বিজেপির বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগর অনুরাগীরা প্রতিবাদে সরব হয়েছে। বিদ্যাসাগর কলেজে ঢুকে মূর্তি ভাঙার কাজে যারা সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল, তারা বাংলার বাইরে থেকে আসা বিজেপি সমর্থক, এমনই অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের তরফে। আর এবার সে কথাই সোশ্যাল মিডিয়ায় স্পষ্ট করে দিয়েছেন কলকাতার মহানাগরিক।