বিশ্বকাপের দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচে দারুণ কামব্যাক করল ‘টিম ইন্ডিয়া’। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারের পর প্রবল চাপে পড়ে গিয়েছিলেন বিরাট কোহলিরা। ব্যাটিং অর্ডারে এতদিন ধরে চার নম্বর পজিশন নিয়ে যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল, তা অনেকটাই দূর হল লোকেশ রাহুল চার নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি পাওয়ায়। সেই সঙ্গে মহেন্দ্র সিং ধোনির অনবদ্য সেঞ্চুরি ভারতীয় ব্যাটিংয়ের গভীরতার প্রমাণ দিল।
মঙ্গলবার শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে ভারত ৯৫ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। কিন্তু সেই ফলাফলের চেয়ে চার নম্বরে খেলতে নামা কে এল রাহুলের ৯৯ বলে ১০৮ রান যে তাঁর কাছে দিনের সেরা প্রাপ্তি, তা জানিয়ে দিয়েছেন কোহালি। তিনি বলেছেন, ‘‘আজকের জয় থেকে সেরা প্রাপ্তি চার নম্বরে রাহুলের সেঞ্চুরি। ও যে ভাবে ব্যাটিং করেছে, তা অসাধারণ।’’ আরও যোগ করেছেন, ‘‘রাহুলের মতো উচ্চমানের ক্রিকেটারের বড় রান পাওয়া আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।’’ ভারত অধিনায়কের মন্তব্যেই স্পষ্ট, আগামী ৫ জুন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খুব সম্ভবত চার নম্বরে রাহুলকে রেখেই তিনি প্রথম একাদশ সাজাবেন।
আরও একটা ব্যাপার স্বস্তি দিতে পারে অধিনায়ক কোহালিকে। এত দিন বলা হচ্ছিল, ভারতের প্রথম তিন ব্যাটসম্যান রান করতে না পারলে মিডল অর্ডার এবং লোয়ার মিডল অর্ডার সেই চাপটা সামলাতে পারে না। এ দিন উল্টোটাই ঘটল। ১০২ রানের মধ্যে চার উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে ভারতের মিডল অর্ডারই দলের হাল ধরল। স্কোর পৌঁছে দিল ৩৫৯ রানে। জবাবে বাংলাদেশ থেমে গেল ২৬৪ রানে। শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে ভারত জিতল ৯৫ রানে।রাহুলকে নিয়ে এত দিন বলা হত, ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের হয়ে ও যত সফল, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ততটা নয়। এ দিন কিন্তু ক্লাসিকাল রাহুলকে দেখলাম। নিখুঁত ফুটওয়ার্ক, দারুণ সব শট। ৯৯ বলে ১০৮ রানের মধ্যে কর্তৃত্বের ছাপটা স্পষ্ট ছিল।
ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট এদিন এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চেয়েছিলেন। চার নম্বরে নামানো হয়েছিল লোকেশ রাহুলকে। আর পাঁচে বিজয় শঙ্করকে। মূলত চার নম্বর পজিশনের লড়াইটা এই দু’জনের মধ্যে। কিন্তু লোকেশ এদিন টেক্কা দিলেন বিজয়কে। কারণ, তামিলনাড়ুর পেস-অলরাউন্ডার বিজয় শঙ্কর ব্যাট হাতে মাত্র ২ রান করেন। তবে লোকেশ রাহুল শুরু থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। পঞ্চম উইকেটে মহেন্দ্র সিং ধোনির সঙ্গে তিনি ১৬৪ রান যোগ করায় ভারত সহজেই ৭ উইকেটে ৩৫৯ রান তুলে ফেলে। লোকেশ রাহুল ৯৯ বলে করেন ১০৮ রান। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ১২টি চার ও চারটি ছক্কা। তবে রাহুলকেও ছাপিয়ে গিয়েছেন ধোনি। তিনি শতরান পূর্ণ করেন ছক্কা হাঁকিয়ে। মাহির ব্যাটিং তাণ্ডবে ডেথ ওভারে দিশেহারা হয়ে পড়েন বাংলাদেশের বোলাররা। ৭৮ বলে ৮টি চার ও ৭টি ছক্কার সাহায্যে ধোনির সংগ্রহ ১১৩ রান। হার্দিক পান্ডিয়া করেন ২১ রান।