মাস আটেক আগেই আগে সাতাশ বছরের নেইমারকে ব্রাজিলের স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করেন কোচ তিতে। রাশিয়া বিশ্বকাপেও পেলের দেশকে নেতৃত্ব দেন নেমার। কিন্তু হালফিলে নিজের ক্লাবে শৃঙ্খলা ভাঙায় শাস্তি পেতে হয়েছে ব্রাজিলীয় তারকাকে। তাই ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন এবং তিতে নেইমারকে নেতৃত্বে রাখার ঝুঁকি নিলেন না। নতুন অধিনায়ক করা হল রাইটব্যাক আলভেসকে। যাঁর বয়স ৩৬ বছর৷ আলভেস প্যারিস সঁ জাঁরমায় নেমারের সতীর্থ৷
২০০৭ সাল থেকে নেইমার ক্যাপ্টেন ছিলেন ব্রাজিল টিমের। এই প্রথম তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হল। শুধু ফুটবল মাঠে নয়, দেশের রাজনীতির সঙ্গেও তিনি জড়িয়েছেন। নিরপেক্ষ থাকতে পারেননি। দেশের চরম দক্ষিণপন্থী প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসনারোর হয়ে মুখ খুলেছিলেন। আরও ঘটনা হচ্ছে, কর সমস্যা মেটার জন্য ব্রাজিলের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন নেইমারের বাবা। এ সব ভালো চোখে দেখেননি ব্রাজিল কোচ তিতে। নেইমারের হাতে আর্মব্যান্ড তুলে দিতে রাজি হননি তিতেই।
নেইমার ফরাসি কাপ ফাইনালের পরে (পিএসজি যেখানে রেনের কাছে হেরে যায়) এক দর্শককে মারতে যান। ওই দর্শক মোবাইলে নেইমারের ছবি তুলছিলেন। অভিযোগ, পিএসজি-র ড্রেসিংরুমে তিনি নানা সময় ঝামেলায় জড়িয়েছেন। এমনকি ফ্রান্সের এই বিখ্যাত ক্লাবে যোগ দেওয়ার পরেই একটি ম্যাচে পেনাল্টি মারা নিয়ে এদিনসন কাভানির সঙ্গে প্রায় হাতাহাতি করেন। আর ফরাসি কাপ ফাইনালের পরে দলের অন্যতম কনিষ্ঠ সদস্য কিলিয়ান এমবাপের সঙ্গে তাঁর তর্ক হয় বলে শোনা গিয়েছিল। নেমার তার আগে দলের জুনিয়রদের সমালোচনা করেছিলেন। এমবাপে যার প্রতিবাদ করেন প্রকাশ্যে।
এখানেই শেষ নয়। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কাছে পরাজিত হওয়া পরে নেইমার রেফারিকে উদ্দেশ্য করে নানা আপত্তিকর মন্তব্য করেন। যার পরে উয়েফাও তাঁকে তিন ম্যাচ নির্বাসিত করে। সম্প্রতি জল্পনা তৈরি হয়েছিল, পরের মরশুমে পিএসজি নেমারকে অধিনায়ক করবে। কিন্তু ক্লাবের ম্যানেজার টোমাস টুহেল সে সম্ভাবনা উড়িয়ে পরিষ্কার বলে দেন, কোনও ভাবেই তিনি নেইমারকে নেতার ভূমিকায় দেখতে চান না। বলা যায় ব্রাজিল জাতীয় দলের কোচ তিতেও সেই রাস্তাতে হাঁটলেন। অথচ আট মাস আগে তিনি জানিয়েছিলেন, কোপায় ব্রাজিলকে নেতৃত্ব দেবেন নেমার। এমনকি নেইমারই জাতীয় দলের স্থায়ী অধিনায়ক থাকবেন। সম্ভবত ফেডারেশনের চাপে তিতে নিজের জায়গা থেকে সরে যেতে বাধ্য হলেন।