মানুষের হৃদয়ের অবক্ষয় ঘটলে তাঁকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে পৌঁছে দেয়। এমনই এক অসহায় মানুষ ছিলেন দমদমের অনুষা অধিকারী। বয়স, ৪৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে ইএম বাইপাস লাগোয়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি তিনি। অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ডাক্তাররা তাঁর দমদমের বাসিন্দা অনুষা অধিকারী। বয়স, ৪৩ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই হৃদযন্ত্রের সমস্যা নিয়ে ইএম বাইপাস লাগোয়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি তিনি। অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর চিকিৎসকরা হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। সেই থেকে চলছিল খোঁজ উপযুক্ত হৃদযন্ত্রের।
শেষপর্যন্ত মঙ্গলবার রাতে মুম্বই থেকে কলকাতা বিমানবন্দর নামে ক্যাসকেড বক্সবন্দি হার্ট। বিমানবন্দর থেকে গ্রিন করিডর তৈরি করে ১৮ কিমি দূরে বাইপাসে বেসরকারি হাসপাতালে হৃদযন্ত্রটি আনতে সময় লাগে ১৬ মিনিট ২০ সেকেন্ড। রাতেই কার্ডিওথোরাসিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন তাপস রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে অনুষা অধিকারী শরীরের হৃদযন্ত্রটি প্রতিস্থাপন করেন চিকিৎসকরা। এখন ভাল আছেন ওই মহিলা। তাঁকে ভেন্টিলেশন রাখা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই নিয়ে ৮ বার সফল হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের সাক্ষী থাকল কলকাতা। বস্তুত, খাস কলকাতায় হার্ট ট্রান্সপ্ল্যান্টের লাইসেন্স আছে, এমন হাসপাতালের সংখ্যা কম নয়। কিন্তু প্রতিস্থাপনে গতি না আসার জন্য অঙ্গের আকালকেই দায়ি করছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, অঙ্গ পেতে গেলে তো রোগীর ব্রেন ডেথ ঘোষণা হওয়া জরুরি। কিন্তু এ তল্লাটে রোগীকে ব্রেন ডেথ ঘোষণার করারই রেওয়াজ নেই।
অনুষার জন্য মুম্বই থেকে যে হৃদযন্ত্রটি এসেছে, তার মালিক এক ১৬ বছরের কিশোর। দুর্ঘটনায় তার ব্রেন ডেথ হয়। মুম্বইয়ের এক বেসরকারি হাসপাতালে হৃদযন্ত্রটি সংরক্ষণ করেন চিকিৎসকরা। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও জাতীয় অঙ্গ প্রতিস্থাপন সংগঠন নোটোর সবুজ সংকেত মিলতেই হার্ট কলকাতায় আনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত বছর কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রথমবার সফলভাবে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করেছিলেন চিকিৎসকরা। নেতৃত্ব ছিলেন কার্ডিওথোরাসিক ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জেন তাপস রায়চৌধুরী। সেবার বেঙ্গালুরু থেকে উড়ে আসা হার্ট বসেছিল ঝাড়খণ্ড দিলচাঁদ সিংয়ের শরীরে। মঙ্গলবারের প্রতিস্থাপন নিয়ে অষ্টমবার শহরে সফল হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপনের ঘটনার সাক্ষী রইল এই শহর৷