সৌজন্যের রাজনীতি মেনেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে আমন্ত্রণপত্র এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো মেনে দিল্লীতে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকবেন তিনি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আচমকা পট বদল৷ প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগদানের পরিকল্পনা বাতিল করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বাংলায় হিংসার ছবি তুলে ধরে যেভাবে বিজেপির তরফে রাজনৈতিকভাবে প্রচার চলছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েই মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত৷ টুইটারে সেকথা স্পষ্ট করেছেন তিনি নিজেই৷ তাঁর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে রাজনীতি ঢুকিয়ে তার গুরুত্ব কমিয়ে দিয়েছে বিজেপি।
এদিন টুইটারে মমতা লেখেন, “প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণে যোগদানের ‘সাংবিধানিক আমন্ত্রণ’ পেয়ে আমি দিল্লীতে যাব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু গত কয়েক ঘণ্টায় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানতে পারলাম রাজনৈতিক হিংসায় বাংলায় নিহত ৫৪ জনের পরিবারকে ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অসত্য তথ্য। বাংলায় কোনও রাজনৈতিক হত্যা হয়নি। সমস্ত হত্যার পিছনে কারণ হিসাবে রয়েছে ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক দ্বন্দ বা অন্য কোনও বিবাদ। এগুলির সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। এমন কোনও তথ্য নথিভুক্ত নেই।” সেইসঙ্গে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “নরেন্দ্র মোদী জি, আমি দুঃখিত। গণতন্ত্র উজ্জাপনের সেরা স্থান হতে পারত এই মঞ্চ। এই মঞ্চকে রাজনৈতিক ফয়দা লোটার জন্য কোনও রাজনৈতিক দলের ব্যবহার করা উচিত নয়। মাফ করবেন।”
প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোটের আগে থেকে শুরু করে লোকসভা নির্বাচন শেষ হওয়া পর্যন্ত বাংলায় ৫০-এরও বেশি বিজেপি কর্মী ও সমর্থককে খুন হতে হয়েছে বলে ভুয়ো অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, এঁদের সকলকেই শহীদ আখ্যা দিয়ে এঁদের পরিবারকে দিল্লীতে নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণে নিয়ে যাচ্ছে তারা। মোট ৭০ জনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিজেপির এই সিদ্ধান্তেই ক্ষুব্ধ হন মুখ্যমন্ত্রী। ৫৪ জন বিজেপি কর্মী বাংলায় খুন হয়েছেন বলে যে দাবি বিজেপি করছে, তা যে সর্বৈব মিথ্যা, সে কথা স্পষ্ট করে দিয়ে টুইটারে মমতা লিখেছেন, “বাংলায় কোনও রাজনৈতিক খুন হয়নি। ব্যক্তিগত শত্রুতা, পারিবারিক কলহ বা অন্য কোনও বিবাদের কারণে এই সব মৃত্যু ঘটে থাকতে পারে, রাজনীতির সঙ্গে এ সবের কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের কাছে সে রকম কোনও রেকর্ড নেই।”