মোদীর এনআরসির হেনস্থার শিকার হতে হল সদ্য নির্বাচিত লোকসভা সদস্যের বৃদ্ধা মাকেও। প্রমাণ দিতে হল নাগরিকত্বের। আসামের বরপেটা থেকে কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত হয়েছেন আবদুল খালেক। তাঁর ৭৫ বছরের বৃদ্ধা মা সাবুয়া খাতুনের নাগরিকত্ব নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল। তাই মাকে নিয়ে এনআরসি কেন্দ্রে হাজির হয়েছিলেন আবদুল খালেক। কিন্তু অভিযোগকারী হৃদয়রঞ্জন নাথ উপস্থিত না থাকায় বৃদ্ধাকে আর প্রমাণ দিতে হয়নি। খালেক জানিয়েছেন, আসামেই জন্ম সাবুয়া খাতুনের। ১৯৫১ সালের এনআরসি তালিকাতেও তাঁর মায়ের নাম ছিল। নাম ছিল ১৯৭০ সালে ভোটার তালিকাতেও। তবু হয়রানি করার জন্যই আপত্তি!”
কংগ্রেসের সদ্যনির্বাচিত সাংসদের মায়ের নাগরিকত্ব নিয়ে অভিযোগ জমা পড়তেই দিল্লী যাওয়ার আগে মাকে নিয়ে এনআরসি কেন্দ্রে শুনানিতে দৌড়তে হল বরপেটার সাংসদ আবদুল খালেককে। মোদীর এই এনআরসির খসড়ায় নাম থাকা ব্যক্তিদের অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ায় রাজ্যে প্রতিবাদ অব্যহত। অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবে হেনস্থার করতেই আপত্তি জানানো হচ্ছে।
আজ দিল্লী যাওয়ার পথে বিমানবন্দর থেকে ফোনে তিনি বলেন, “আমি চারবার নির্বাচনে লড়েছি। তিনবার জিতেছি। দুবারের বিধায়ক, এ বার সাংসদ। আমার মা বিদেশি হলে তো আমিও বিদেশি! খামোকা হেনস্থা ও অপমানের জন্য প্রকৃত ভারতীয়দের এ ভাবে হেনস্থা করা ঠিক নয়”। সম্প্রতি প্রাক্তন কংগ্রেস মন্ত্রী গৌতম রায়ের নাগরিকত্ব নিয়েও অভিযোগ জমা পড়েছিল। খালেক বলেন, “ক্রমাগত মিথ্যে অভিযোগ জমা দেওয়ায় সমগ্র এনআরসি প্রক্রিয়াই অযথা বিলম্বিত হচ্ছে। এদের শুনানিতে আসার সাহসটুকুও নেই”। অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বেশ কিছুদিন ধরেউই আসামের বিভিন্ন সংখ্যালঘু সংগঠন এনআরসি–র নামে অযথা হয়রানির অভিযোগে সরব। বিরোধী দলের প্রাক্তন মন্ত্রী বিধায়করাও উটকো আপত্তির জেরে হেনস্থা হচ্ছেন। হাইলাকান্দির ডাকসাইটে কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায় ও তাঁর ৬ বছরের নাতির বিরুদ্ধেও আপত্তি জমা পড়েছিল।
সোমবার কামরূপ জেলার বোকোর সাঁওতালি গ্রামে আসরাফ আলি (৯০) নামে এক বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেন।
পরিবারের অভিযোগ, ২৩ মে এনআরসি কেন্দ্রে অপমান হজম করতে না পেরেই বৃদ্ধ বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বিষয়টি উল্লেখ করেল খালেক। নিন্দা করেন বিদেশি সন্দেহে ধৃত অমৃত দাসের মৃত্যুরও।