গত ২৩ মে লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস শুরু করে দিয়েছে আগ্রাসী গেরুয়া শিবির। বাংলার কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে বিহার-গুজরাটের সংস্কৃতির আমদানি করতে চাইছে বিজেপির নেতা-কর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে বাংলায় বিজেপির উত্থান রুখতে তৃণমূলের নতুন অস্ত্র হতে চলেছে ‘বাঙালি ও বাঙালিয়ানা’। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাংলার রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় জোর দিচ্ছে তাঁর দল।
তৃণমূলের অভিযোগ, ইদানীং বাংলাকে ক্রমশ গ্রাস করতে চাইছে হিংসা ও প্রলোভনের রাজনীতি। সুকৌশলে বাঙালির মনে বিষের সঞ্চার করা হচ্ছে। রাজনৈতিক স্বার্থে বাংলাভাষী মানুষের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। তৃণমূল নেত্রী মনে করছেন, এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে শুধু রাজনৈতিক লড়াই যথেষ্ট নয়। বাছতে হবে অন্য পথ। তৃণমূল সূত্রের খবর, বাঙালিয়ানা রক্ষায় সমান্তরাল অরাজনৈতিক আন্দোলন গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়েছেন দলনেত্রী।
দলের আরেক নেতা জানিয়েছেন, এবার লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার সময় দলের স্লোগান ছিল, ‘তৃণমূল, আমার আপনার বাংলার’। তার পর সেটি তেমন ভাবে প্রচারে আসেনি। এবার ফিরিয়ে আনা হবে সেই স্লোগানটি। আবার উত্তর কলকাতার বিজয়ী তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বাংলার সংস্কৃতি নষ্ট করার ষড়যন্ত্র চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজ্যে ৮৬ শতাংশ মানুষ বাংলাভাষী। হিন্দু, মুসলিম সব সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাংলাভাষীদের মধ্যে ধর্ম ও জাতপাতের বিভেদ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। জনপ্রতিনিধিদের কেনাবেচার চেষ্টা হচ্ছে। এই অপচেষ্টা রুখতে হবে। এজন্য বাংলা ও বাঙালিয়ানার নতুন স্লোগান নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলবে দল।’ মুকুল রায় দু-চারজন বিধায়ক ভাঙালেও, তৃণমূলের বড় কোনও ক্ষতি করতে পারবেন না বলে মনে করেন সুদীপ।
দলের নেতারা বলেছেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের জন্য সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করেছেন। নির্বাচনী ইস্তাহারের চেয়ে বেশি কাজ করেছেন। উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে দলের খারাপ ফল হয়েছে। অথচ উত্তরবঙ্গে পৃথক সচিবালয় করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জঙ্গলমহলকে ঢেলে সাজিয়েছেন।’ তবে জানা গেছে, উন্নয়ন প্রকল্পগুলি প্রত্যন্ত এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে ঠিক ভাবে পৌঁছেছিল কি না, সেটাই এবার খতিয়ে দেখবে দল।