৪ ডিসেম্বর ১৮২৯ সতীদাহ প্রথা আইন করে তুলে দেওয়া হয়৷ সতীদাহ প্রথা হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে বা আত্মহুতি দেবার এক প্রথা, যা পরবর্তীকালে রাজা রামমোহন রায়ের উদ্যোগে বন্ধ হয়। বৃটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীতে সতিদাহ প্রথাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয়। অবশ্য এ আইনি কার্যক্রম গৃহীত হয়েছিল মূলত রাজা রামমোহন রায়ের সামাজিক আন্দোলনের জন্যেই। আর এই বহু চর্চিত ‘সতীদাহ প্রথা’ নিয়ে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে কুরুচিকর মন্তব্য করে বিতর্কে জড়িয়েছেন অভিনেত্রী পায়েল রোহতগি।
টুইটারে গর্বিত হিন্দু বলে নিজের পরিচয় দিয়েছেন পায়েল। তাঁর টুইটার হ্যান্ডলের নাম ‘পায়েল রোহতগি অ্যান্ড টিম-ভক্তস অব ভগবান রাম)। গত ২৩ মে সেখান থেকেই রামমোহনকে ‘দেশদ্রোহী’ এবং ‘ব্রিটিশদের চামচা’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘হিন্দু ধর্মের প্রতি আঘাত হানার জন্য ব্রিটিশরা ব্যবহার করেছিলেন রাজা রামমোহনকে। হিন্দু ধর্মের সহমরণ প্রথার বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়েছিলেন ব্রিটিশদের ‘চামচা’ রাজা রামমোহন রায়।’ শুধু এখানেই থেমে না থেকে তিনি আরও লেখেন, ‘সতীদাহ প্রথা মোটেই বাধ্যাতামূলক ছিল না। মোঘল সম্রাটদের ধর্ষণের হাত থেকে হিন্দু মহিলাদের রক্ষা করার জন্যই চালু হয়েছিল সতীদাহ। এই প্রথা মহিলারাই বেছে নিয়েছিলেন।’
তারপরই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের ঝড় উঠেছে। তীব্র নিন্দা করা হয়েছে তাঁকে। পায়েল রোহতগির বিরুদ্ধে ‘বাক স্বাধীনতা’র অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন কেউ কেউ। কেউ কেউ আবার বলেছেন, সংসদে ঢোকার জন্যই এমন আচরণ করছেন তিনি। এইসব নিয়েই উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। এমনকী, অভিনেত্রী যে অল্পবিদ্যা ভয়ংকরী হয়ে ‘জহর ব্রত’ এবং ‘সতীদাহ প্রথা’কে গুলিয়ে ফেলেছেন এমন মন্তব্যও করেন নেটিজেনরা। রাজা রামমোহনের মতো সমাজ সংস্কারক এবং নব জাগরণের দূতকে এধরনের ভাষায় অপমান করার জন্য পায়েলকে একহাত নিতে বিন্দুমাত্র পিছপা হননি সংস্কারমনস্ক ব্যক্তিরা।
পূর্বেও দিল্লীতে মুঘল সম্রাটদের নামে যত রাস্তা রয়েছে, তা বদলে হিন্দু রাজাদের নামে করে দেওয়ার দাবি তুলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। দিল্লির বিখ্যাত খান মার্কেটের নাম বদলে বাল্মিকী মার্কেট করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সে বারও তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে।