নির্বাচনের পর থেকেই সন্ত্রাসের অভিযোগে উত্তপ্ত এবং রক্তাক্ত ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিস্তীর্ণ এলাকা। সদ্য ভোটে জেতা বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহ তৃণমূলে থাকাকালীন যে কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন, সেই ভাটপাড়া থেকে শুরু করে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া বিধায়ক তথা মুকুলপুত্র শুভ্রাংশু রায়ের এলাকা বীজপুর, নৈহাটি— সব জায়গা থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি আক্রমণ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। ওই সব এলাকারই ‘আক্রান্ত’রা সোমবার দুই মন্ত্রীর হাত ধরে নবান্নে রাজ্যের পুলিশ কর্তার কাছে যান। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলে ডিজি আশ্বাস দিয়েছেন।
ডিজি’র কাছে ডেপুটেশন দেওয়ার পর নবান্নে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয় ভাটপাড়া এলাকার একটি ঘরছাড়া পরিবার। ভাটপাড়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদগোপপাড়ার বাসিন্দা কার্তিক নাথ এদিন অভিযোগ করেন, শুধুমাত্র তৃণমূল করার দায়ে তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে বিজেপির হুমকির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। প্রাণনাশের ধমকিও দেওয়া হচ্ছে। এরকম একটা পরিস্থিতিতে এদিন খুব ভোরে স্ত্রী এবং ১২ বছরের মেয়েকে নিয়ে তিনি বাধ্য হয়েছেন ঘর ছাড়তে।
এদিন বিধানসভায় এসেছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নির্মল ঘোষ, তাপস রায়। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘বিজেপির অত্যাচার ক্রমশ বাড়ছে। সামনে সিপিএম কর্মীদের রেখে বিজেপি তৃণমূলের কার্যালয় দখল করছে। মারধর করছে। আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে। কয়েকটি দলীয় কার্যালয় বিজেপির হাত থেকে নেওয়া গেছে। যেসব ওরা দখল করেছে, তা সবই আমরা ফিরিয়ে নেব। হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালিতে অনেকের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’
জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘যারা হাঙ্গামা করছে, সেই সব বিজেপি–সিপিএমের গুন্ডাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। বদলার বদলা হবে। আমরা ছাড়ব না।’ নির্মল ঘোষ বলেন, ‘কামারহাটি, নীলগঞ্জ ও পানিহাটিতে বিভিন্ন জায়গায় ঘড়ছাড়াদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘হাবড়া, বনগাঁ, গাইঘাটা দলীয় অফিস উদ্ধার করা হয়েছে।’ তাঁর অভিযোগ, কাউন্সিলরদেরও ভয় দেখানো হচ্ছে। দু–একদিনের মধ্যেই বিজেপির দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হবে। সিপিএমের দেওয়া ভোটে জিতে বিজেপি তাণ্ডব চালাচ্ছে। আমরা কিছুতেই মেনে নেব না। ইতিমধ্যে অনেককেই মারধর করা হয়েছে। অনেকের চিকিৎসা চলছে। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে’।