সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে দিল্লীর মসনদে বসেছেন মোদী সরকার। তারপরই আবার খবরের শীর্ষে উঠে এসেছে মোদীর বিতর্কিত এনআরসি। এই নিয়মের জন্যই আরও এক ভারতীয় নাগরিক আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে আসামের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে বোকো এলাকার সোনতোলিতে। নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কাতেই এই আত্মহত্যা বলে জানা যাচ্ছে।
রবিবার ৮৮ বছরের বৃদ্ধ আসরফ আলির দেহ মেলে সোনতোলিতে তাঁর নিজের বাড়িতে। পরিবারের সদস্য এবং প্রতিবেশীদের দাবি যে এনআরসি খসড়া তালিকায় নাম না-ওঠার পর অভিযোগের নিশানা হয়ে মানসিক অবসাদ ভুগছিলেন তিনি। নাগরিকত্ব হারানোর আশঙ্কার কথাও বলতেন প্রায়ই। সেই অবসাদ থেকেই আসরফ বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। পরিবার সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধ্যায় রমজানের উপবাস পর্বের শেষে খাবার আনতে বাজারে যাবেন বলে আসরফ বাড়ি থেকে আসরফ বার। তারপর থেকে তাঁর খোঁজ মেলেনি।
২০১৭-র ডিসেম্বরে প্রকাশিত এনআরসি’র প্রথম খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়। দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশিত হয় ২০১৮ সালের জুলাই। দু’দফার খসড়া তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরেও তাতে অসমের ৪০ লক্ষ বৈধ নাগরিকের ঠাঁই হয়নি বলে অভিযোগ। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটে অসম-সহ দেশজুড়ে বিজেপির বিপুল জয়ের পরে সংখ্যালঘুদের একাংশ ভারতীয় নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, প্রথম দফার খসড়া তালিকায় নাম উঠলেও আসরফ-সহ গোটা পরিবারের ভারতীয় নাগরিকত্বকে চ্যালেঞ্জ করে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। গত ২৩ মে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আসরফকে তলব করে এনআরসি কর্তৃপক্ষ শুনানি করেন। তার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, অসমে এ পর্যন্ত নাগরিকত্ব খোয়ানোর আশঙ্কায় মোট ২৩টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ।