বাংলাতে কার্যত সাইনবোর্ড ঝুলে গেছে বাম শিবিরের ভোট বাক্সে। লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় অবস্থা হয়েছে বাম প্রার্থীদের। এমনকি জাতীয় রাজনীতিতেও মুখ থুবড়ে পড়েছে বাম প্রার্থীরা। একসময়ের বাংলার মত ত্রিপুরাও পরিচিত ছিল লাল দূর্গ নামে। আর সেই সিপিএমের এইবার লোকসভা নির্বাচনে ত্রিপুরাতেও ধরাশায়ী অবস্থা।
টানা ২৫ বছর ধরে ত্রিপুরায় ক্ষমতায় ছিল সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট। তার আগেও মাঝের পাঁচ বছর বাদ দিলে টানা ১০ বছর তাঁরা সেখানে ক্ষমতায় ছিল। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির কাছে হেরে ত্রিপুরার মসনদ। আর তারপরই লোকসভা নির্বাচনে একেবারে চাপে পড়ে গেছে বাম শিবির।পূর্ব ও পশ্চিম ত্রিপুরা দুটি লোকসভা কেন্দ্রেই কংগ্রেসের থেকেও কম ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান পেয়েছে সিপিএম। শুধু তাই নয়, বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে, মোট ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে একটিতেও প্রথম স্থানে নেই সিপিএম।
গত ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে পশ্চিম কেন্দ্রে সিপিএম শঙ্করপ্রসাদ দত্ত পাঁচ লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন। পূর্ব কেন্দ্রে জিতেন চৌধুরী পাঁচ লক্ষের কিছু কম ভোট পেয়ে জিতেছিলেন। কিন্তু এবারও প্রার্থী হয়ে তাঁরা আশানুরূপ ফল করতে পারেননি। এমনকি দ্বিতীয় স্থানও ধরে রাখতে পারে নি। দুটো থেকেই জেতেন বিজেপি প্রার্থী। যেখানে ত্রিপুরায় কংগ্রেস গতবছর বিধানসভায় সেইরকম ফল করতে পারে নি। সেখানে এবার তাঁরা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। পূর্ব ত্রিপুরায় কংগ্রেস পেয়েছে ২৬.৬ শতাংশ আর সেখানে বাম পেয়েছে ১৯.২ শতাংশ। অন্যদিকে, পশ্চিম ত্রিপুরায় কংগ্রেস পেয়েছে ২৪.২ শতাংশ আর বামে ভোট পেয়েছে ১৫.৫ শতাংশ।
গতবছর বিধানসভা নির্বাচনে ১৬টি আসন নিজের দখলে রাখতে পারলেও এইবার লোকসভায় সেই আশাও ক্ষীন হয়ে গেছে। এছাড়া আর কেউই দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে পারেনি। কোথাও তৃতীয় তো কোথাও বা আবার চতুর্থ স্থানেও নেমে গেছে বাম প্রার্থীরা। এই শোচনীয় অবস্থার উন্নতির পথে না হেঁটে বাম নেতৃত্ব ও সমর্থকরা এখনও নিজেদের ‘ঔদ্ধতা’ বজায় রেখেছেন। দেশে এখন বামপন্থীরা প্রায় নিভে যাওয়া সলতের মত দপদপ করছে।