ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শাসন, নীতির সর্বসমক্ষে সমালোচনা করেছেন তিনি। তার মূল্যও দিয়েছেন। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদ থেকে সরানো হয়েছিল তাঁকে। এবার মোদীর বিপুল জয় নিয়ে কী ভাবছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন?
‘নিউ ইয়র্ক টাইমস’–এ একটি নিবন্ধে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন অমর্ত্য সেন। নিবন্ধের শিরোনাম ‘মোদী ওয়ান পাওয়ার, নট ব্যাট্ল অফ আইডিয়াজ’। সোজা কথায়, চিন্তাদর্শের যুদ্ধে নয়, ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে জিতেছেন মোদী। সেখানে তিনি লিখেছেন, “হিন্দুত্ববাদী জাতীয়তাবাদী বিজেপি লোকসভার ৫৪৩টি আসনের মধ্যে ৩০০–র বেশি জিতে আরও পাঁচ বছর শাসনের দায়িত্ব পেয়েছে। নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ। কিন্তু এটা কী করে করলেন মোদী? আর প্রাচীন দল ভারতের জাতীয় কংগ্রেসই বা কী করে মাত্র ৫২টি আসনে আটকে গেল? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে অনেকেই মতাদর্শের কথা বলছেন। বিশেষত ভারতে হিন্দুত্ববাদের আধিপত্যের প্রেক্ষিতে।”
বছর কয়েক আগের চেয়ে বিজেপির একনিষ্ঠ সমর্থক আজ কী করে এতটা বাড়ল? এর জবাবে তিনি লিখেছেন, “এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে মোদী একজন ব্যতিক্রমী রকমের দক্ষ ও সুচতুর রাজনীতিক। একে তাঁর জেতার একটি কারণ ধরলে অনেকের কাছে সেটা হয়তো নিতান্তই অলস ব্যাখ্যা মনে হবে। তবে দলের চোখ ধাঁধানো উত্থানে মোদীর ভূমিকার ব্যাখ্যা খোঁজা অন্যায়ও হবে না।”
এরপর অমর্ত্য আরও বিশদে বলেন, মোদী কীভাবে ‘দ্বেষ ও ঘৃণাকে’ রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে মানুষের চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করেছেন। দ্বেষ তাঁদের প্রতি, যাঁদের চিন্তাভাবনা অন্যধারার। দ্বেষ অন্য ধর্মের মানুষের, যেমন মুসলিমদের প্রতি। তাঁর পর্যবেক্ষণ, প্রচারে যেমন নিজেই ব্যক্তিগত ক্যারিশমাকে কাজে লাগিয়েছেন মোদি, তেমনি অকাতরে টাকাও ঢেলেছেন।
পুলওয়ামা হামলার ঘটনা উল্লেখ করে অমর্ত্য লিখেছেন, “এবারের নির্বাচনে মোদী শুধুই সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছেন দেশজুড়ে, কিন্তু বিগত পাঁচ বছরে তিনি কী কী প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পেরেছেন, তার প্রচার করেননি একবারের জন্যেও।