বাংলাতে কার্যত সাইনবোর্ড ঝুলে গেছে বাম শিবিরের ভোট বাক্সে। লোকসভা নির্বাচনে শোচনীয় অবস্থা হয়েছে বাম প্রার্থীদের। এমনকি জাতীয় রাজনীতিতেও মুখ থুবড়ে পড়েছে বাম প্রার্থীরা। আসলে বাংলাজুড়ে গোপনে এবার বামপন্থীদের প্রচার ছিল, ‘১৯-এ রাম, ২১-এ বাম’। কিন্তু, এই স্লোগান যে সুজন-অশোকদের কেন্দ্রে বুমেরাং হবে তা বুঝতে পারেননি বামেরা। এখানেই শেষ নয়, সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বামপন্থীদের যে বিশাল প্রভাব ছিল তার প্রতিফলন ঘটত পোস্টাল ব্যালটে। এবার ভোটের ডিউটিতে যাওয়া বাম-কর্মীদের একাংশ পোস্টাল ব্যালটেও প্রার্থীদের সমর্থন জানাননি।
আর তার ফলে বামফ্রন্টের মুখ, সেই সুজন চক্রবর্তী, অশোক ভট্টাচার্য, তন্ময় ভট্টাচার্য ও মানস মুখোপাধ্যায়দের কেন্দ্রে বাম প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে হেরে গেলেন। কংগ্রেস প্রার্থী না থাকায় যাদবপুরে সুজন কোনওক্রমে দলের ভোট দ্বিতীয় স্থানে রাখতে পারলেও অশোক-তন্ময়-মানসদের কেন্দ্রে বাম প্রার্থী তৃতীয় স্থানে চলে গিয়েছেন। গোপনে রাম-বাম আঁতাতের ফল ভুগতে হয়েছে। তার জেরে বামফ্রন্টের প্রার্থীর এমন শোচনীয় পরাজয় বলে মেনে নিয়েছেন বাম পরিষদীয় দলের প্রধান সুজন চক্রবর্তী।
নির্বাচন কমিশনের বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলে দেখা গিয়েছে, এবার ভোটে বিকাশ ভট্টাচার্যর সৌজন্যে কংগ্রেস প্রার্থী না দেওয়ায় যাদবপুরে বামফ্রন্ট পেয়েছে ৬৮৫১৫ ভোট। সেখানে তৃণমূলের মিমি চক্রবর্তী পেয়েছেন ৮০৬৭০ এবং বিজেপির অনুপম হাজরা পেয়েছেন ৪৮৬৯৬ ভোট।
এছাড়া আর কেউই দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে পারেনি। কোথাও তৃতীয় তো কোথাও বা আবার চতুর্থ স্থানেও নেমে গেছে বাম প্রার্থীরা। এই শোচনীয় অবস্থার উন্নতির পথে না হেঁটে বাম নেতৃত্ব ও সমর্থকরা এখনও নিজেদের ‘ঔদ্ধতা’ বজায় রেখেছেন।