গত ১৯ মে শেষ হয়েছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। আগামীকাল ভোটের ফল প্রকাশ। গণনা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে। সেই সময়
ভোট গণনায় নিযুক্ত কর্মীরা কারও দেওয়া জলও যেন স্পর্শ না করেন। দলের পক্ষ থেকে কর্মীদের উদ্দেশ্যে এমনই কঠোর নির্দেশিকা জারি করেছে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে ইভিএম রাখার স্ট্রং রুমগুলির ওপর অতন্দ্র নজর রাখতে হচ্ছে দলীয় কর্মীদের।
প্রসঙ্গত, ভোট যন্ত্রে কারচুপি বা বদলে দেওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। দলীয় সতীর্থদের পাশাপাশি দেশের সমস্ত বিরোধী দলের উদ্দেশ্যেই ইভিএম এর উপর নজরদারিতে গুরুত্ব দিতে আবেদন করেছেন তিনি। একইসঙ্গে রাজ্যে ভোটগণনা পর্ব শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলের কর্মীদের কী কী কর্তব্য, তৃণমূল নেত্রীর এমন সাত দফা নির্দেশিকা থেকে দলের জেলা পর্যবেক্ষকদের এবং সংশ্লিষ্ট জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
সপ্তদশ লোকসভা ভোটে শুধু কেন্দ্রের শাসক জোটের বিরুদ্ধে নয়, পক্ষপাতদুষ্ট নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও লড়তে হয়েছে তাঁদের। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্যোপাধ্যায়ের দাবি, বিজেপির বর্ধিত অফিস হয়ে উঠেছিল কমিশনের দফতর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ কেন্দ্রের শাসকদলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালেও কমিশন তাতে কর্ণপাত করেনি। শুধু তৃণমূলই নয়, দেশের প্রায় সমস্ত বিরোধী দল একই সুরে কমিশনের ভূমিকার সমালোচনায় সরব হয়েছে।
স্বভাবতই, ভোট গণনাতেও কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন মমতা। দলের পক্ষ থেকে তাই ভোট গণনা নিয়ে সাংগঠনিক প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখতে চায় না রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের সাত দফা নির্দেশিকায় ইভিএম মেশিনের সিল পরীক্ষা করে দেখতে বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর কোনও কেন্দ্রের সব পোলিং এজেন্টের উপস্থিতিতে মেশিন সিল করা হয়। তার সাক্ষী হিসেবে সিলের ওপরে সই করতে হয়। তৃণমূলের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, সেই সিল যথাযথ রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করে তবেই যেন তা ভাঙা হয়। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
পোলিং এজেন্টদের ইভিএম-এর কাজ শেষ হলেও ভিভিপ্যাট গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে থাকতে হবে। ফল প্রকাশের পর সার্টিফিকেট না দেওয়া পর্যন্ত কেউ গণনাকেন্দ্র ছাড়তে পারবেন না। দলের পক্ষ থেকে খাদ্য এবং পানীয় জল পাঠানো হবে। সেই খাবার ও পানীয় ছাড়া অন্য কেউ কিছু দিলে, তা গ্রহণ না করার কথাও ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। যে যেখানে যে দায়িত্বে রয়েছেন, সেখানে থেকে কোনও মতেই সরে যাওয়া চলবে না।
শুধু তাই নয়। কোনওরকম গোলমাল বা রটনায় নজর না দিয়ে নিজের উপর ন্যস্ত কাজের দায়িত্ব অটল থাকতে হবে। কোনও প্ররোচনাতেই গণনা টেবিল ছেড়ে যাওয়া চলবে না। অর্থাৎ এজেন্টরা যাতে কোনও মতেই অন্যমনস্ক না হয়ে পড়েন, সেদিকে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে তৃণমূলের নির্দেশিকায়। জানা গেছে, প্রতিটি গণনা কেন্দ্রের বাইরে, কমিশন নির্দিষ্ট দূরত্বে দলের পক্ষ থেকে ক্যাম্প করা হচ্ছে। সেখানে দলীয় কর্মীদের জমায়েত নিশ্চিত করতে হবে বলে জানান হয়েছে।