বিরোধীরা স্থির করেছেন, ফল প্রকাশের পর বিজেপি জোট যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পায়, তাহলে রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে তাদের সরকার গড়ার আমন্ত্রণ জানাতে দেবেন না। তার আগেই বিরোধীরা সরকার গড়ার দাবি জানাবেন। কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা জানিয়েছেন, ত্রিশঙ্কু সংসদ হলে আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কাছে যাব। এনডিএ যদি গরিষ্ঠতা না পায়, আমরা কর্ণাটক মডেলের পুনরাবৃত্তি করব। তবে এসম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ইউপিএ-র চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী।
কর্ণাটকে ত্রিশঙ্কু বিধানসভায় বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতে দ্রুত বিরোধী ইউনাইটেড জনতা দলের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল কংগ্রেস। রাজ্যপাল বিজেপিকে আমন্ত্রণ জানানোর আগেই তারা সরকার গড়ার দাবি জানিয়েছিল। লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর সেই মডেলই অনুসরণ করতে চাইছে কংগ্রেস।
গত সপ্তাহে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর বাড়িতে ম্যারাথন মিটিং-এ বসেন দলের কোষাধ্যক্ষ আহমেদ প্যাটেল এবং অপর প্রবীণ নেতা অভিষেক সিংভি। রাহুল গান্ধী তাঁদের সঙ্গে বসে স্থির করেন, গণনার দিন ঠিক কী স্ট্র্যাটেজিতে চলবে কংগ্রেস। একটি সূত্রে খবর, সিংভির নেতৃত্বে কংগ্রেসের আইনজীবীরা ভোটপরবর্তী পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে কয়েকদফা পরিকল্পনা করে রেখেছেন। এনডিএ বহির্ভূত কোন কোন দল প্রয়োজনে কংগ্রেসকে সমর্থন করতে পারে, তারও একটা তালিকা তৈরি হয়েছে।
সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি যদি মনে করেন, কোনও দল বা জোট দেশে স্থিতিশীল সরকার গড়তে পারবে, তাদের তিনি আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। সাধারণত যে দল বা জোট সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে, তাদেরই আগে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ২০০৪ সালের ভোটে কোনও দল নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পায়নি। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধীকে সরকার গড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কারণ কংগ্রেস পেয়েছিল ১৪৫ টি আসন। অন্যদিকে বিজেপি পেয়েছিল ১৩৮ টি। কংগ্রেস সেবার দ্রুত ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স নামে একটি জোট গড়ে। বামেরা বাইরে থেকে সেই জোটকে সমর্থন জানায়। এবারও কয়েকজন ‘বন্ধুভাবাপন্ন’ নেতার সঙ্গে কংগ্রেস আগেই আলোচনা করে রেখেছে, কোন পরিস্থিতিতে সরকার গড়ার দাবি জানানো হবে। তাঁদের মধ্যে আছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু, সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ সিং যাদব এবং বহুজন সমাজ পার্টির মায়াবতী।