বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশঙ্কাই এবার সত্যি হওয়ার পথে। আগেই তিনি বলেছিলেন, বিজেপি সব করতে পারে। তাঁর কাছে খবর আছে বিজেপি ইভিএম মেশিন লুঠ করতে পারে। তাই মা, বোন, ভাইদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। এমন কিছু দেখলে ছবি তুলে পাঠাতে হবে। এই কাজ যিনি করবেন তাঁকে সরকারের পক্ষ থেকে পুরষ্কার দেওয়া হবে। তবে দিন কয়েক আগেই ফ্রন্টলাইনে একটি খবরে দাবি করা হয়েছে, বেশ কয়েক লক্ষ ইভিএম মেশিন লোপাট হয়ে গিয়েছে। হ্যাঁ, সত্যিই ২০ লাখ ইভিএমের কোনও হদিশ নেই! হারিয়ে গেছে নির্বাচন কমিশনের হেফাজত থেকে। ভারতের যে দুটি সংস্থা ইভিএম তৈরি করে, তারা সরবরাহ করার পর এই বিপুল সংখ্যক নিখোঁজ ইভিএমের হিসেব মিলছে না। এই তথ্য জানা গেছে, বম্বে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া এক জনস্বার্থ মামলার সূত্রে।
প্রসঙ্গত, তথ্য জানার অধিকার আইনে মুম্বইয়ের সমাজকর্মী মনোরঞ্জন রায় ২০১৭ সালের জুন মাসে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন বম্বে হাইকোর্টে। তথ্যের অধিকার জানাত আইনে তিনি মূলত জানতে চান, কীভাবে কাদের থেকে বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্র বা ইভিএম কেনা হয়, কীভাবে সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ হয়, সে সম্পর্ক। সেই সময়ই জবাবে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন আদালতকে জানায়, ১৯৮৯-৯০ এবং ২০১৪-১৫ সালে তারা ভারত ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড-এর কাছ থেকে ১০ লাখ ৫ হাজার ৬৬২টি ইভিএম কিনেছে। দ্বিতীয় একটি সংস্থা ১৯৮৯-৯০ এবং ২০১৪-১৫ সালে কেনা হয়েছে আরও ১০ লাখ ১৪ হাজার ৬৪৪টি ইভিএম।
কিন্তু ২০১৮ জানুয়ারিতে, ওই একই জনস্বার্থ মামলার সূত্রে ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড বম্বে হাইকোর্টকে জানায়, নির্দিষ্ট ওই দুটি বছরে তারা ১৯ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩২টি ইভিএম নির্বাচন কমিশনকে সরবরাহ করেছে। একইভাবে ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড জানায়, তারা সরবরাহ করেছে ১৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৯৩টি ইভিএম। প্রায় ২০ লাখ ইভিএমের হিসেব না মেলার এই তথ্য ২০১৮-র ২৭ মার্চ বম্বে হাইকোর্টে জমা দেন আবেদনকারী মনোরঞ্জন রায়। পাশাপাশি তিনি এ-ও জানান, ইভিএমের খরিদ্দারি খাতে ১১৬.৫৫ কোটি টাকারও হিসেব মিলছে না। এই জনস্বার্থ মামলা সংক্রান্ত খবরটি বিস্তারিত ভাবে প্রকাশিত হয়েছে দ্য হিন্দু কাগজের সংবাদ-পত্রিকা ফ্রন্টলাইন-এ। তারপরই জাতীয় রাজনীতির অলিন্দে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। বিরোধীদের প্রশ্ন, ২০ লক্ষ ইভিএমের নাকি কোনও খোঁজ নেই। তাহলে সেগুলি গেল কোথায়? এই কারসাজি করবে বলেই কি বিজেপি’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল এবার ৩০০ আসন পার করবে তারা?