শেষ দফা ভোটের আগের দিন তীর্থে গেছেন প্রধানমন্ত্রী! আকাশপথে কেদারনাথ মন্দিরে এসেছেন নরেন্দ্র মোদী। পায়ের নীচে লাল কার্পেট, শরীর মোড়া আলখাল্লা ধাঁচের পাহাড়ি পোশাকে, মাথায় হিমাচলি টুপি। গেরুয়া কোমরবন্ধ। জোড়হাত। তিনি হাঁটছেন। তীর্থে এসেছেন অথচ পায়ের নীচে কার্পেট!
কেদারনাথ মন্দিরে জনতার প্রবেশ নিষিদ্ধ করে প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে মন্দিরের ভিতরে পুজো দিয়েছেন দেশের মোদী। তার পরে কার্পেটে হেঁটে মন্দির প্রদক্ষিণ করেছেন। কাঁধ থেকে বাঘছাল ছাপ চাদর লুটোচ্ছে কার্পেটে।
মন্দির-পর্ব সেরে এক গুহায় প্রধানমন্ত্রী ধ্যানে বসেছিলেন। পিঠের পিছনে দেখা গেল বালিশও। কাঠের জানলাও রয়েছে গুহায়। দেওয়ালে জামাকাপড় টাঙানোর হুক। সেই গুহায় ধোপদুরস্ত গদি-পাতা তক্তপোশে ‘ধ্যানমগ্ন’ মোদীর ছবি ভাইরাল হল মুহূর্তে। সন্ধের আগে ধ্যানভঙ্গ হয় মোদীর। গুহা থেকে বেরিয়ে কেদারনাথের আরতি দেখেন।
গতকাল দেহরাদূনের জলি গ্রান্ট বিমানবন্দরে নামেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে বায়ুসেনার হেলিকপ্টারে সোজা কেদারনাথে। আসার পথে কপ্টার থেকে তোলা বরফঢাকা হিমালয়ের ছবি টুইটারে পোস্ট করেন মোদী। খানিক পরেই একটি ভিডিয়ো। যাতে দেখা যাচ্ছে, উত্তরাখণ্ডের শীর্ষ আমলাদের সঙ্গে কেদারনাথ সংস্কার নিয়ে কথাবার্তা বলছেন মোদী। বিরোধীরা এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে। কমিশন আগাম বলেছিল, প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে তারা জানিয়ে দিয়েছে, এই সফরে যেন নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ না-হয়। কিন্তু বিরোধীরা মনে করাচ্ছেন, শেষ দফার ভোটের আগে এখন ‘সাইলেন্স পিরিয়ড’ চলছে। অথচ মোদী শুধু যে ‘কাজ দেখাচ্ছেন’ তা-ই নয়, কেদারনাথে হিন্দুত্বের প্রচারও করে চলেছেন।
ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল মোদীকে খোঁচা দিয়ে বলেছেন, ‘‘একেবারে ২৩ তারিখে ভোটের ফল দেখে ঝোলা-কম্বল নিয়ে গেলে পারতেন। সেই তো যেতেই হবে!’’ বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ী দেবী বললেন, ‘‘কখনও দেখেছেন, কেউ লাল কার্পেট পেতে ধর্ম করতে যায়?’’ কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার টুইট, ‘‘প্রকৃত ভক্ত ‘বাবা’-র কাছে যান অহং বিসর্জন দিয়ে। লাল কার্পেট বিছিয়ে নয়।’’