শেষ দফার ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিঠি পাঠালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিক সুনীল আরোরাকে লেখা ওই চিঠিতে পক্ষপাতহীন, শান্তিপূর্ণ ও কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শেষ দফা নির্বাচনের প্রায় ১২ ঘণ্টা আগে এ দিন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল অরোরাকে চিঠিতে মমতা লিখেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সরকার তথা কেন্দ্রের শাসক দলের প্রভাবের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়ায় একাধিক বেআইনি, অসাংবিধানিক এবং পক্ষপাতিত্বে ভরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর ফলে রাজ্য সরকার এবং তার আধিকারিকদের তো বটেই, সাধারণ মানুষকেও নানা ভাবে হেনস্থা ও হামলার মুখে পড়তে হয়েছে’। এই চিঠিতে গত মঙ্গলবার বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের র্যালির আসল উদ্দেশ্য নিয়েও বিস্ফোরক দাবি করেছেন মমতা। নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত কলকাতার পুলিশ কমিশনার ওই দিন কেন কলেজস্ট্রিটে ১৪৪ ধারা তুলে দিয়েছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘রাজ্যের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যময় ভাবমূর্তি নষ্ট করতে, এই রাজ্যের মানুষ তথা সরকারের মানহানির জন্যই সে দিন ইচ্ছাকৃত ভাবে রোড শোয়ের নামে এক অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।’
বিবেক দুবে ও অজয় নায়েকের নিযুক্তি নিয়েও কমিশনের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তিনি লিখেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন দু’জন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিককে বিশেষ পর্যবেক্ষক হিসাবে নিয়োগ করেছে, যা আইনানুগ নয়।’ মমতার দাবি, “এই বিশেষ পর্যবেক্ষকেরা সব সময়েই পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ করেছেন। বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার তথা কেন্দ্রের শাসক দলের নির্দেশই মেনে চলেছেন।’
বাংলায় আগামী কাল রবিবার ৯টি কেন্দ্রে শেষ দফার ভোটগ্রহণ হতে চলেছে। এই দফায় কেন্দ্রীয় সরকার ও কেন্দ্রের শাসক দলের হস্তক্ষেপ ছাড়া শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করার আবেদন করেছেন মমতা। একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলি ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো রক্ষার এবং বিরোধী দলগুলির সম্মানের কথাও কমিশনকে মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।