নিম্নমানের খাবার বিলির অভিযোগ তুলে তিনি এক সময় কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। সেই কারণেই কি এবার ষড়যন্ত্র করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তেজবাহাদুরের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছিল? অভিযোগ তেমনই। এক বেসরকারী টিভি চ্যানেলের স্টিং অপারেশনে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
প্রসঙ্গত, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বহিষ্কৃত জওয়ান তেজবাহাদুর যাদবকে বারাণসীর ভোটে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি ও রাষ্ট্রীয় লোকদলের জোট। ফলে, তাঁর মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় বারাণসী কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর লড়াই অনেকটাই সহজ হয়েছে। কিন্তু, কীভাবে বাতিল হল তেজবাহাদুরের মনোনয়ন? ওই টিভি চ্যানেলের স্টিং অপারেশনে ধরা পড়েছে, নিয়মবহির্ভূত ভাবে মনোনয়ন বাতিলে হস্তক্ষেপ করেন নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক প্রবীন কুমার।
নিয়ম অনুযায়ী, মনোনয়ন খামতি থাকলে একবার মাত্র নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু, তেজবাহাদুরকে দু-বার নোটিস দেওয়া হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশ রাজ্য নির্বাচন দফতরের ডেপুটি সিইও ইন্দ্রভূষণ বর্মা বলছেন, ‘পর্যবেক্ষক কোনও প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলে হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। তাঁর ভূমিকা শুধুই পর্যবেক্ষণ।’ নিয়ম অনুযায়ী, দেশদ্রোহ বা দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কোনও প্রার্থীর মনোনয়ন পত্রের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের ছাড়পত্র দিতে হয়। তবে, তেজবাহাদুর এই দুটির কোনও অভিযোগেই বরখাস্ত হননি। জেলা রিটার্নিং আধিকারিকের প্রথম নোটিসের জবাবে সেকথা জানিয়েছিলেন তিনি।
তেজবাহাদুরের আইনজীবী রাজেশ গুপ্তার অভিযোগ, কমিশনের সব নিয়ম মেনে মনোনয়ন পত্র পেশ করা হয়েছিল। রিটার্নিং অফিসার বারাণসীর জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্তা তা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু, তাতে হস্তক্ষেপ করেন নির্বাচন কমিশনের পর্যবেক্ষক। প্রসঙ্গত, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে নিম্ন মানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ তুলে ভিডিও পোস্ট করে বরখাস্ত হয়েছিলেন বিএসএফ জওয়ান তেজবাহাদুর যাদব। আর ৫ বছরের কম সময়ে বরখাস্ত হলে, শুধুমাত্র বরখাস্তের প্রমাণ জমা দিতে হয়।
তবে হলফনামায় তা জানিয়ে দ্বিতীয়বার মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছিলেন তেজবাহাদুর। কিন্তু, এর ৫ ঘণ্টা পর দ্বিতীয় নোটিস দেওয়া হয়। শেষ দিন সন্ধ্যা ছ’টায়। তাতে বলা হয়, নির্বাচন লড়তে হলে পরদিন সকাল ১১টার মধ্যে ছাড়পত্র আনতে হবে। যা প্রায় অসম্ভব ছিল। তা সত্ত্বেও রাতেই কমিশনে পৌঁছন তেজবাহাদুরের আইনজীবী নীতিন মিশ্র। অভিযোগ, তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরদিন সকালে কমিশনে গিয়ে কমিশনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলানো হয়। কিন্তু, তাতেও কাজ হয়নি।