বিজেপিকে হঠাতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছিলেন একের বিরুদ্ধে এক ফর্মূলা। কিন্তু মানুষ এতটাই ক্ষুব্ধ যে এখন একের বিরুদ্ধেই গোটা দেশ! হেভিওয়েট প্রার্থী তিনি। দেশের প্রধানমন্ত্রীও। কিন্তু এবারের লােকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে কসুর করছেন না কেউ। হ্যাঁ, বারাণসী আসনে মোদীকে হারাতে নির্বাচনী লড়াইয়ে মোদীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর উৎসাহ দেখলে চোখ কপালে উঠতে বাধ্য। মোট ২৫ জন প্রার্থী সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন তাঁর বিরুদ্ধে। আর তাৎপর্যের বিষয়, এই প্রার্থীদের কেউ অন্ধ্রপ্রদেশ, কেউ মহারাষ্ট্র, কেউ আবার ছত্তিশগড়, বিহার, কেরালা বা উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা। যা দেখে এই ‘স্পেশাল ২৫’-কে ‘মিনি ইন্ডিয়া’ আখ্যা দিচ্ছেন রাজনৈতিক মহল।
প্রসঙ্গত, ভোট-লড়াইয়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে মােদীকে যে তাঁরা টক্কর দিতে পারবেন না, সেটা ভাল মতোই জানেন এঁরা। কিন্তু তবুও ওঁরা সামান্য হলেও বেগ দিতে চান তাঁকে। কারণ ৫ বছরের মোদী জমানায় বীতশ্রদ্ধ সকলেই। এঁদেরই একজন মনোহর আনন্দ রাই পাটিল। মহারাষ্ট্রের এই কৃষক মহাত্মা গান্ধীর একটা চিঠির ছবি গলায় ঝুলিয়ে গান্ধীর সাজেই ঘুরছেন। তিনি বলেন, জেতা নয়, আমার মূল লক্ষ্য কৃষকদের দুরাবস্থা এবং দুর্নীতি নিয়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। আবার অন্ধ্রপ্রদেশের বাসিন্দা মানব বিশ্বমানবও মোদীর বিরুদ্ধে লড়ছেন। কৃষক বাবা মারা যাওয়ার পর মা এখন বিশাখাপত্তনম স্টেশনে কুলির কাজ করেন। তিনিও কৃষকের দুরবস্থার বিষয়টি মোদীর নজরে আনতে চান।
প্রাক্তন অলিম্পিয়ান প্রয়াত মহম্মদ শাহিদের কন্যা হিনা শাহিদও রয়েছেন এই তালিকায়। তিনি চান, মহিলাদের সমস্যার কথা তুলে ধরতে। তাঁর কথায়, ‘জানি, আমার পক্ষে মোদীকে হারানো সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ বলে শুধু ঘরে বসে থাকলেই তো চলবে না।’ ছত্তিশগড়ের রায়পুরের বাসিন্দা মণীশ শ্রীবাস্তব লড়তে এসেছেন অভিনব একটি দাবি নিয়ে। তিনি চান, প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী তাদের সন্তানকে সরকারি স্কুলে পাঠাবে এবং সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নেবে, এই বিষয়টি বাধ্যতামূলক ঘোষণা করুক সরকার। আবার নমামি গঙ্গে-র ব্যর্থতার ইস্যুকে সামনে রেখে মোদীর বিরুদ্ধে লড়তে নেমেছেন হরিদ্বারের বাসিন্দা সুনীল কুমার। তাঁর কথায়, আমি গঙ্গা পুত্র। গঙ্গাপাড়ের বাসিন্দা।
এমনই হরেক হরেক দাবি নিয়ে মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন বাকিরাও। সকলেই চান চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে, বিগত ৫ বছরে কোন কোন কাজে ব্যর্থ মোদী সরকার। সকলের বক্তব্যও এক, মোদীর বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই রাজনৈতিক নয়। বরং এই লড়াই আদর্শের, অধিকার আদায়ের। সবমিলিয়ে বলতে গেলে, এই ‘মিনি ইন্ডিয়া’র মুখ ২৫ হলেও লক্ষ্য কিন্তু একটাই।