বিদ্যাসাগর কলেজে হামলা এবং ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাকে কেন্দ্র করে উত্তাল গোটা বাংলা। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির বিরুদ্ধে আছড়ে পড়ছে সমালোচনার ঝড়। রাজনৈতিক মহলও সরব এই নিন্দনীয় ঘটনায়। এর মধ্যেই পুলিশ তদন্ত করে জানিয়ে দিল, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় জড়িত রয়েছে ভিন রাজ্যের লোকজনই।
পুলিশের বক্তব্য, যারা মূর্তি ভাঙা এবং গোলমাল সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে তাঁরা সকলেই অন্য বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা এবং তাঁদের সঙ্গে মিশে ছিল ভিন রাজ্যের যুবকেরাও। এদের অধিকাংশই ঝাড়খন্ড এবং বিহারের বাসিন্দা। হেফাজতে থাকা ৫ অভিযুক্ত জেরায় ভিন রাজ্যের বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উপস্থিতির কথা স্বীকার করেছে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে বাইরের রাজ্যের বাসিন্দাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। মিছিলের লোকেরা যে কলেজের গেটের তালা ভাঙছে, তার ফুটেজও মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। এদিকে, যে ব্যক্তিকে বিদ্যাসাগরের মুর্তিতে প্রথম আছাড় দিতে দেখা গিয়েছিল সে কোন জেলার বাসিন্দা, তাও অফিসাররা জানতে পেরেছেন বলে খবর। তার খোঁজে একটি টিম রওনা দেবে।
তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, যারা মূর্তি ভাঙা ও গোলমাল পাকানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে, তারা সকলেই বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা। কিন্তু তাদের সঙ্গে যে ভিন রাজ্যের যুবকরা মিশে ছিল, তা জানতে পেরেছেন অফিসাররা। যারা কয়েকদিন আগে এ রাজ্যে ঢুকেছিল বলে খবর। এদের অধিকাংশই ঝাড়খণ্ড ও বিহারের বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিসের দাবি, হেফাজতে থাকা পাঁচ অভিযুক্ত জেরায় জানিয়েছে, কলেজ স্ট্রিট থেকে মিছিল বিধান সরণীর দিকে এগনোর সময় সামনের দিকে ভিন রাজ্যের বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা ছিল। তাদের অধিকাংশই গেরুয়া রঙের জ্যাকেট পরে ছিল। প্রত্যেকেই হিন্দিতে কথা বলছিল।
ভি ন রাজ্যের ওই যুবকরা কলেজের ভিতর ঢুকে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙতে শুরু করে। মিছিলে থাকা কর্মী ও সমর্থকরা যে কলেজের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকেছে, তা সিসিটিভির ফুটেজ থেকে নিশ্চিত তদন্তকারী অফিসাররা। বৃহস্পতিবার নতুন কিছু ফুটেজ তাঁদের হাতে এসেছে। যে সমস্ত ভিডিও পুলিশের হাতে এসেছে, তা অভিযুক্তদের দেখিয়ে বাইরের রাজ্যের বিজেপি কর্মী ও সমর্থকদের চিহ্নিত করতে বলা হয়। সূত্রের খবর, অল্প কয়েকজনকে তারা চিহ্নিত করেছে। কিন্তু তাদের নাম বা পরিচয় জানাতে পারেনি।
মুর্তি ভাঙার তদন্তে গতি আনতে ইতিমধ্যেই সিট গঠন করেছে লালবাজার। শুক্রবার এর সদস্যরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করেন। ঘটনার তদন্তে সিসিটিভির ফুটেজকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তাঁরা। বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ভিডিও এবং কলেজের ফুটেজের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয় এদিন। তাতে দেখা যাচ্ছে, সবক’টি ফুটেজে একই ব্যক্তিদের মূর্তি ভাঙতে দেখা যাচ্ছে। অফিসাররা নিশ্চিত, ফুটেজ বিকৃত করা হয়নি। তবে তার সত্যাসত্য যাচাই করতে নিয়মমাফিক তা ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে।