পাঁচ বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে কাটিয়ে দিলেন মোদী। তার মধ্যে বিদেশি সফর থেকে শুরু করে করেছে অনেক জনসভা। কিন্তু এর মধ্যে দেশে একবারের জন্যও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি তিনি। বিদায়ের শেষ লগ্নে এসে অমিত শাহের সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করলেন তিনি। তবে কার্যত পুতুলের ভূমিকাতেই থাকলেন তিনি। এরপরই বিরোধীরা আসরে নেমেছেন। এহেন ঘটনায় নিন্দার পাশাপাশি তৈরি হয়েছে জল্পনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘নীরব’ মোদীকে নিয়ে হাসির রোল উঠেছে। সঙ্গে সমান তালে চলছে কটাক্ষ।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর কথায়, ‘অভিনন্দন মোদিজি, অসাধারণ সাংবাদিক বৈঠক! আশা করি পরেরবার মিস্টার শাহ আপনাকে কিছু প্রশ্নের হয়তো উত্তর দিতে দেবেন।’ শুধু তিনি একা নন সব বিরোধীরাই একই সুরে সুর মিলিয়েছেন। সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদবও শুক্রবার মোদির সমালোচনায় সরব হন। তিনি বলেন, ‘ওঁদের সাংবাদিক সম্মেলন দেখে মনে হল যেন রেডিওর পরিবর্তে টিভির পর্দায় একটা ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান দেখলাম। সাংবাদিকদের সেখানে প্রশ্ন করার কোনও সুযোগই দেওয়া হল না। তাঁদের অনুগত সৈনিকদের মতো মুখে কুলুপ এঁটে বসে থাকতে দেখা গেল।’
টুইটারে মোদীর নিন্দা করেছেন লোকতান্ত্রিক জনতা দলের প্রধান শরদ যাদবও। লিখেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে গত পাঁচ বছরে বিজেপির শাসনকালে মোদি একবারও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে পারেননি। সবার মনেই এ প্রশ্ন উঠেছে। আর মোদীর বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই সাফ যে তিনি হার স্বীকার করে নিয়েছেন। তাই এটাই তাঁর সরকার এবং পার্টির শেষ সাংবাদিক সম্মেলন।’ কংগ্রেস নেতা আহমেদ পটেল টুইট করেন, ‘আমি এমন কোনও সাংবাদিক সম্মেলন দেখিনি যেখানে কেউ নিজেই নিজের প্রশ্নের উত্তর দেন।’ রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের গলাতেও একই সুর। ‘মোদির বডি ল্যাঙ্গুয়েজেই বলে দিচ্ছে তিনি পরাজয় মেনে নিয়েছেন।’ খোঁচা দিতে ছাড়েননি জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং ন্যাশনাল কনফারেন্স দলের নেতা ওমর আবদুল্লাও। তাঁর কথায়, ‘সাংবাদিকদের ছদ্মবেশে থাকা বিজেপি কর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি অমিত শাহ।’
মোদীর এই নীরবতা যে শুধু তাঁকে হাসির খোরাক করেছে তাই না সঙ্গে জল্পনাও উস্কে দিয়ে গেছে। মোদীর এহেন চুপচাপ থাকা কি তাঁর লোকসভা হারের পূর্বাভাস? যতই সমস্ত প্রচারে গিয়ে তিনি জয়ের ব্যাপারে আশার কথা শোনাক, ভেতরে ভেতরে কি ফলাফল নিয়ে চিন্তিত? এইসব প্রশ্নই ঘুরে বেড়াচ্ছে জাতীয় রাজনীতির আবহাওয়ায়। উত্তরের জন্য অপেক্ষা আর কিছু সময়ের।