জয় গোস্বামী, যিনি ‘পাগলি তোমার সঙ্গে আদম ইভ কাটাব জীবন’ লিখে জায়গা করে নিয়েছিলেন কবিতাপ্রেমীদের বুকে। তবে শুধু প্রেম নিয়েই কলম চালাননি তিনি, কলম ধরেছিলেন দুর্নীতির বিরুদ্ধেও। বাম আমলের নন্দীগ্রামের ওই কালো অধ্যায়ের বিরুদ্ধে অন্যতম প্রধান মুখ হয়ে উথেছিলেন তিনি। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়েও তিনি মনে করেন মমতাই দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অন্যতম মুখ। তাঁর ওপরে আস্থা রাখা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
জয়ের মতে, “এই অবস্থায় একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে এই অশুভ শক্তির বিরোধিতা করছেন। আমাদের ভরসা যে, আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো যোগ্য নেত্রী পেয়েছি আমাদের দেশে। এই সাম্প্রদায়িক এবং বিভেদগামী শক্তি ভয়ঙ্কর। এরা ভবিষ্যতে আমদেরও বিতারিত করতে পারে। এই অশুভ শক্তিকে আটকে দেওয়া সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমাদের আস্থা রাখা দরকার। সামনে ভোট। এই ভোটেই নির্ধারিত হবে মানুষের সুচিন্তা।”
‘এখনও যদি চুপ করে থাকি, এখনও যদি ঝাপিয়ে পড়তে না পারি– আমার সমস্তশিল্প আজ থেকে গণহত্যাকারী’ নন্দীগ্রাম গণহত্যার প্রেক্ষিতে শাসক দলের বিরুদ্ধে এই ছিল জয় গোস্বামীর বিধ্বংসী প্রতিবাদ। ফেসবুক-হোয়াটসয়্যাপে ভাইরাল হওয়ার যুগ আসেনি তখনও। ছিল না হাজারো লাইক শেয়ারের মাহাত্ম্য! অথচ জয়ের কবিতার এই লাইন মুখে মুখে ঘুরত সেই সময়। এভাবেই জয় গোস্বামী বাম শাসকের বিরুদ্ধে হাতে তুলে নিয়েছিলেন তীক্ষ্ণ কলম। সেই সময় প্রকাশিত হয় তাঁর দুটি কবিতার বই ‘শাসকের প্রতি’ এবং ‘হার্মাদ শিবির’। সংবেদনশীল কবি জয় গোস্বামী এভাবেই কঠোর বিরোধিতা করেছিলেন বাম সরকারের।
শুধু তাই নয়, কবি ছুটে গিয়েছিলেন ঘটনাস্থলে। কথা বলেছিলেন সেখানকার সাধারণ মানুষদের সঙ্গে। নন্দীগ্রাম গণহত্যা প্রসঙ্গে কবি জয় গোস্বামী বলেন, “নন্দীগ্রামে যে গণহত্যা হয়েছিল তাঁর পিছনে তৎকালীন সরকারের সমর্থন ছিল এবং সেখানে নারীদের ধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই ঘটনা বাংলার ইতিহাসে অত্যন্ত দুর্দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এর পর অনেক মানুষ প্রতিবাদে পথে নেমেছিল। আমাদের প্রতিবাদ সফল হয়েছিল। কারণ, পরবর্তী নির্বাচনে তৎকালীন সরকারের পতন হয়।”