দেখতে দেখতে একেবারে শেষ লগ্নে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। সাত দফা ভোটের বাকি আর মাত্র এক দফা। শেষ দফায় ভোট হবে বাংলার ৯ আসনে। বৃহস্পতিবার ভোট প্রচারের শেষ লগ্নে ওই ন’জন প্রার্থীর নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঔদ্ধত্য নাকি ঔদার্য? স্বৈরতন্ত্র নাকি প্রকৃত গণতন্ত্র? দেশের প্রতি ভালবাসা, নাকি দ্বেষ? ভোট দিতে যাওয়ার আগে এইসব প্রশ্ন বিবেচনার আর্জিও জানালো তাঁর দল।
প্রসঙ্গত, গোটা রাজ্য ঘুরে প্রায় ১০০ সভা ও ১৬টি পদযাত্রা করেছেন মমতা। এবার সোশ্যাল মিডিয়াতেও কেন্দ্র ভিত্তিক দলীয় প্রার্থীর নামে ভোট চাইলেন তৃণমূল নেত্রী। দক্ষিণ কলকাতায় প্রার্থী মালা রায়। রাজ্যে তো বটেই, দেশেও এই লোকসভা আসনের সঙ্গে মমতার নাম বস্তুত সমার্থক হয়ে গিয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে তাঁর সংসদীয় জীবনের সঙ্গে এই কেন্দ্র আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে। তাই সেখানকার নির্বাচকমণ্ডলীর উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, মালাকে সমর্থন করা মানেই মমতাকে ভোট দেওয়া।
এর লাগোয়া যাদবপুর আসনটিও মমতার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ। মমতা সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেন, যাদবপুর আমার প্রিয় কেন্দ্র ছিল, আছে, থাকবে। সেখানে তৃণমূলের প্রার্থী চিত্রতারকা মিমি চক্রবর্তী। মমতার দাবি, মিমির জনপ্রিয়তা দেশময়। অভিনয় জগতের মানুষ হলেও সবসময় মা-মাটি-মানুষের কথা ভাবেন মিমি। নুসরত জাহান, বসিরহাটের প্রার্থী খুব বড় মনের মানুষ। তিনি নিজে টিকিট না চাইলেও সব পেশার মানুষকে সঙ্গে পেতেই তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়েছে বলে জানান মমতা। তাঁর দাবি, নুসরত ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা করে চলতে পারেন। তাঁকে ভোট দিলে তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করবেন, বিশ্বাস মমতার।
মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুনরায় নির্বাচিত করার জন্য ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রের ভোটারদের প্রতি আবেদন করেছেন মমতা। তিনি বলেন, অভিষেক কাজের ছেলে। এলাকায় কাজ করেছে। আরও উন্নয়নের কাজ করবে। তৃণমূল প্রার্থীদের জেতানো মানে দিল্লিতে বাংলা আরও শক্তিশালী হবে। এছাড়াও কলকাতা উত্তরে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দমদমে সৌগত রায়, বারাসতে কাকলি ঘোষদস্তিদার, মথুরাপুরে চৌধুরীমোহন জাটুয়া, জয়নগরে প্রতিমা মণ্ডল এই পর্বের ভোটে তৃণমূলের টিকিটে লড়াইয়ে রয়েছেন। তাঁদের সম্পর্কেও আলাদা আলাদা ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
এবারের ভোট দেশের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক অধ্যায় হতে চলেছে। ভোটারদের কাছে বিলি করা আবেদনে এমনটাই দাবি তৃণমূলের। তাদের মতে, এই নির্বাচন ঠিক করে দেবে কোন ভারতকে আমরা চাই। দেশের প্রতি ভালোবাসা নাকি দ্বেষ, সেটাই বিচার করতে হবে। ভাবতে হবে স্বৈরতন্ত্র, নাকি গণতন্ত্র। ওই আবেদনে ভোটাধিকার প্রয়োগের আগে পাঁচ বছরে মোদী সরকারের জমানার নোটবন্দী থেকে বেকারত্ব-সহ নানা বিপর্যয়ের কথা মনে করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আর্জিও জানানো হয়েছে। ভোটারদের উদ্দেশ্যে মমতার বার্তা, বাংলাই দিল্লীকে পথ দেখাবে। তাই তৃণমূল প্রার্থীর জয় মানে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া।