মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই এই দাবি করেন যে, ‘বাংলায় রাম-বাম এক হয়ে গেছে।’ মুখ্যমন্ত্রীর ধারণা যা ভ্রান্ত নয়, হালেও মিলেছে তাঁর প্রমাণ। ব্যারাকপুরে ভোটের আগে একাধিক বার গোপনে বৈঠক করতে দেখা যায় বিজেপির অর্জুন সিং এবং প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ তড়িৎ বরণ তোপদারকে। আর এবার আবারও প্রকাশ্যে এল রাম-বামের আঁতাত। এবং তা ঘিরেই বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল উত্তেজনা তৈরি হল নাগেরবাজারে।
প্রসঙ্গত, পল্টু দাশগুপ্ত সিপিএমের দাপুটে নেতা ছিলেন। বরাবরই সকলে তাঁকে অমিতাভ নন্দীর ডানহাত বলে জানতেন। পল্টুবাবু উত্তর ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্যও ছিলেন দীর্ঘ সময়। ছিলেন সিপিএমের দমদম জোনাল কমিটির সম্পাদকও। সম্পাদকমণ্ডলী থেকে বাদ পড়ার পর জেলা কমিটিতেও ছিলেন দীর্ঘ সময়। দমদমে ‘পলাশযুগ’ শুরু হওয়ার পর কোণঠাসা হতে থাকেন পল্টু।
সিপিএমের গত আভ্যন্তরীন ভোটাভুটিতে হেরে একেবারে নীচের স্তরের শাখা কমিটিতে জায়গা হয় তাঁর। তবে ভোটাভুটিতে হেরে এখন আর কমিটিতে নেই তিনি। আর সেই কারণে তাঁকে সামনে রেখেই বিজেপির সঙ্গে সমঝোতার পথ তৈরি করছে আলিমুদ্দিনের বাবুরা। এ হেন পরিস্থিতিতে তাঁর অনুগামীদের বিজেপির হয়েই কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন পল্টু। গতকাল লেনদেন সংক্রান্ত কাজকর্মেই মুকুল-শমীকের সঙ্গে মিটিং করেছেন বলে শোনা যায়।
যদিও বিপাকে পড়ে এখন সিপিএমের বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য দাবি করেন, ‘পল্টু দাশগুপ্ত নামে দমদম অঞ্চলে এক জন সিপিএম নেতা ছিলেন বটে। তবে এখন এ নামে সিপিএমের কোনও স্তরে কোনও নেতা নেই।’ বাম-বিজেপির গোপন আঁতাত বা টাকা লেনদেনের কথা উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চেয়েছেন ওই সিপিএম নেতা।
তবে তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘তৃণমূলের কেউ গাড়ি ভাঙচুর করেনি। বিজেপির লোকেরাই আঁতাতের খবরে গাড়ি ভেঙেছেন। গেস্ট হাউজে টাকা বিলিয়েছেন মুকুল।’ তাঁর কটাক্ষ, ‘আসলে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর মানুষের সমবেদনা পাওয়ার চেষ্টা করছে ওরা।’