যত লোকসভা নির্বাচন শেষ লগ্নে উপস্থিত হচ্ছে ততই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন গেরুয়া শিবির। একের পর নেতৃত্বের মন্তব্য ঘিরে দেশ জুড়ে উঠছে বিতর্কের ঝড়। কয়েকদিন ধরেই গান্ধীজির হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে তৈরি হয়েছে প্রবল বিতর্ক। এইবার সেই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢাললেন বিজেপির এক মুখপাত্র অনিল সৌমিত্র। মহাত্মা গান্ধীকে ‘পাকিস্তানের জনক’ বলায় অস্বস্তিতে এই বিজেপি নেতা।
অনিল সৌমিত্রর ফেসবুক পোস্টের জেরে বিতর্ক ছড়ায় দেশজুড়ে। ওই পোস্টে অনিল লেখেন, ‘মহাত্মা গান্ধী হলেন পাকিস্তানের জনক। ভারত তাঁর মতো কোটি কোটি সন্তানকে জন্ম দিয়েছে। তার মধ্যে কিছু ভাল ও আর কিছু খারাপ।’ শুধু তাই নয়। তিনি তাঁর এই মন্তব্যের সাফাইয়ে আরও বলেন, তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে দেখে ক্ষমা চাইতে যান অনিল। কিন্তু, তখনও নিজের পোস্ট নিয়ে সাফাই দিয়ে বলেন, ‘ভারতীয় সংস্কৃতিতে জাতির জনক বলে কোনও উপাধি কোনওদিনই ছিল না। আমরা সবাই ভারতমাতার সন্তান। জাতির জনক শব্দটি চালু করেছিল কংগ্রেস। যা আজ পর্যন্ত চলে আসছে। তাছাড়া পাকিস্তান সৃষ্টির বিষয়ে সাহায্য করেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। জওহরলাল নেহেরু এবং মহম্মদ আলি জিন্না দু’জনকেই সাহায্য করেছিলেন। তবে কংগ্রেস মুখে গান্ধীজির কথা বললেও তাঁকে কোনওদিন অনুসরণ করেনি। বরং বিজেপি সারাজীবন গান্ধীজির নীতি মেনে চলেছে। যেমন স্বচ্ছতা অভিযান ও স্বদেশী জিনিসের ব্যবহার।’
এই মন্তব্যের পরই আসরে নামেন বিরোধীরা। কংগ্রেস মুখপাত্র পঙ্কজ চর্তুবেদী বলেন, ‘বিজেপি নেতারা যখনই সুযোগ পান তখনই মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। আর নাথুরাম গডসে-কে মহান প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেন। কিছুদিন আগে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে নাথুরামের মন্দির তৈরির চেষ্টা করেছিল হিন্দু মহাসভা। এই ধরনের ঘটনা দেশের মানুষ কোনওভাবেই মেনে নিতে পারবে না। বিজেপিরও এইসব ঘটনার নিন্দা করা উচিত।’ একাধিক নেতৃত্বের এহেন মন্তব্যে ক্রমশ কোণঠাসা হয়ে পড়ছে গেরুয়া শিবির।