বাঙালির ঈশ্বরের মূর্তি ভাঙার প্রতিবাদ জানাতে ভোট বাজারে সোশ্যাল মিডিয়ায় হাজির ফেলুদা থেকে শবর, সৌমিত্র থেকে ব্যোমকেশ। জনপ্রিয় ছবির নানা দৃশ্য ব্যবহার করে তৈরি হওয়া মিম মঙ্গলবার থেকে ফেসবুকে ঘুরছে। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক ঘটনা হচ্ছে, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর থেকেই ফেসবুক জুড়ে হাজার হজার বিদ্যাসাগর কলেজের প্রাক্তন ছাত্রদের দেখা যাচ্ছে। ‘হাজার হাজার ডক্টর হাজরা’! ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার পর সোশ্যাল মিডিয়া দেখে ‘সোনার কেল্লা’র এই সংলাপই মনে পড়তে বাধ্য। অভিযোগ, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মূর্তি ভাঙার পর রাতারাতি ওই কলেজের শয়ে শয়ে ছাত্র তৈরি করে ফেলেছে বিজেপির আইটি সেল। সেই ছাত্রদের নাম আলাদা, রূপ আলাদা, তবে বয়ান হুবহু এক।
মঙ্গলবার রাতে ফেসবুকে প্রথম ওই পোস্ট দেখা যায় বিরাজ নারায়ণ রায় নামে এক ব্যক্তির প্রোফাইলে। তিনি লিখেছেন, “আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র, আমি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কিন্তু আমার গর্বের দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে আজ যে জঘন্য রাজনীতি করল, তা লজ্জার। থাকি বিদ্যাসাগর কলেজের কাছে, তাই পুরো ঘটনাটি সামনে থেকে দেখেছি”। ওই পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু হতেই তিনি নিজের প্রোফাইল ডিঅ্যাক্টিভেট করে দেন। ফেসবুকে এখন ‘আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’ লিখে সার্চ করলেই ভেসে উঠছে সে সব বয়ান। কিন্তু ডিঅ্যাক্টিভেট করার আগেই বিরাজের প্রোফাইল দেখেছিলেন, তাঁরা জানাচ্ছেন, তিনি বর্তমানে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র। বাড়ি কোচবিহারে। এবং বিরাজ বিজেপির প্রচারক।
বিরাজ ফেসবুক থেকে উধাও হয়ে গেলেও তাঁর বাণীটি রেখে যান সমাজমাধ্যমে। অল্প ক্ষণেই তা ছড়িয়ে পড়ে। দেখা যায়, সঞ্জীব গুহ, প্রণব চৌধুরী, পার্থপ্রতিম রায় চৌধুরী— এ রকম আরও অনেক ‘বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’ বেরিয়ে পড়েছেন। তাঁরা সকলেই ‘থাকেন’ বিদ্যাসাগর কলেজের কাছে। সকলের বয়ান এক। বিজেপির সর্বভারতীয় আইটি সেল-এর প্রধান অমিত মালবীয় সেই লিখনই পোস্ট করেন।