বিদ্যাসাগর কলেজে গেরুয়া বাহিনীর হামলা এবং ঐতিহ্যশালী বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুরকে কেন্দ্রকে করে উত্তাল গোটা বাংলা। সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক প্রতিবাদী লেখা আছড়ে পড়ছে ঝড়ের মত। এই অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনার প্রতিবাদে সামিল হলেন টলি পাড়ার তারকারাও।
পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তী, সৌকর্য ঘোষাল থেকে শুরু করে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব, মিমি-সহ অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। আসলে এই ঘটনা এতটাই ন্যক্কারজনক যে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন সকলেই।
ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী অভিনেতা দেব তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, “আমাদের বর্ণপরিচয়,আমাদের উচ্চারণ, আমাদের ভাষা,আমাদের অস্তিত্ব আক্রান্ত।আমরা বাঁচতে চাই আমাদের ভাষা নিয়ে,বাঁচতে চাই আমাদের বর্ণ পরিচয় নিয়ে।আমাদের বাংলা বিদ্বেষের বাংলা নয়।আমাদের বাংলা রামমোহন রবীন্দ্রনাথ বিদ্যাসাগরের বাংলা। হিংসা ভুলে, দ্বেষ ভুলে আসুন নতুন বাংলা গড়ার শপথ নিই”।
প্রতিবাদে ফেসবুকে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন পরিচালক সৌকর্য ঘোষাল। তিনি লিখেছেন, “বিদ্যাসাগর সমাজশিক্ষার মাথা। তা উপড়ে না নিলে রাজনীতি জমবে কেন”? শেষদফা ভোটের আগে যেভাবে বাংলায় সন্ত্রাস তৈরি করল বিজেপি তারপর কেই বা চুপ থাকতে পারে?
সরব হয়েছেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষও। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, “তোমাদের রাম-রহিম কোনও ভোট ঈশ্বরকেই তো আমারা ভাঙি না, তাহলে আমাদের বিদ্যার ঈশ্বরকে ভাঙলে কেন?” ঘটনার প্রতিবাদে সামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিচালক তথা সাংবাদিক অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি লিখেছেন, “হ্যাঁ, আমি এটার কথাই বলে ছিলাম । এরা আমাদের বর্ণপরিচয় এ হাত দেবে। প্রতিরোধ করুন”।
ফিল্মি কায়দায় ঘটনার তীব্র নিন্দা করছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা ঋদ্ধি সেন। তিনি লিখেছেন, “ হাউ ইজ দ্য জোশ? হাই স্যার! আচ্ছা চলো তাহলে এবার একটা দেশের হৃদয়, ‘শিক্ষা ব্যবস্থা’কে আক্রমণ করা যাক!” এরসঙ্গেই সৌকর্য ঘোষালের পোস্টটিও শেয়ার করেছেন তিনি।
অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় নিজে টুইটারে কিছু না লিখলেও পরিচালক রামকমল মুখোপাধ্যায়ের টুইটটি শেয়ার করেছেন। রামকমল লিখেছেন, “ ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বর্নপরিচয় এবং রিয়ান।ভাবতেই পারিনি এই ছবিটা এই সময়ে এত প্রাসঙ্গিক হবে। কলকাতা, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল ২০১৮”।
শুধু তারকারা নয়, প্রতিবাদে সামিল সাধারণ মানুষও। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভের এই অনর্গল ধারায় আসলে মাথা উঁচু করেই দাঁড়িয়ে বিদ্যাসাগর। কখনও বর্ণপরিচয়, কখনও অন্য নানা লেখা উঠে আসছে টাইম লাইনে। ক্ষোভে ফুঁসছেন সকলে।