বিগত ৫ বছরে সাংবাদিক বৈঠক থেকে দূরেই থেকেছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দেশের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেও এ প্রসঙ্গে বরাবর চুপ থাকতেই দেখা গেছে তাঁকে। তবে এবারের লোকসভা নির্বাচনের সময় দেশে যে গতবারের মতো ‘মোদী লহর’ নেই, তা টের পেয়েই ভোট মরশুমে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তাতেও তৈরি হয়েছে বিতর্ক। কারণ বিভিন্ন মহল থেকেইতিমধ্যেই এই অভিযোগ উঠছে যে, কোনও কঠিন প্রশ্ন কিছুতেই নিতে চাইছেন না প্রধানমন্ত্রী।
তবে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর খবর, এবার এমন একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এল, যেখানে দেখা যাচ্ছে সাক্ষাৎকারের প্রশ্নপত্র সম্ভবত আগে থেকেই পেয়ে গিয়েছিলেন মোদী। টুইটারে এমনই একটি ভিডিও ক্লিক পোস্ট করে দাবি করেছেন তথ্য সন্ধানী ওয়েবসাইট ‘অল্ট-নিউজ’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা প্রতীক সিনহা। নিজেকে মুক্তচিন্তক হিসেবে দাবি করা প্রতীক টুইটারে বেশ কিছু ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করে দেখাতে চেয়েছেন, সাক্ষাৎকারের প্রশ্ন আগে থেকেই ছিল মোদীর হাতে। আর এই সাক্ষাৎকারটি ‘নিউজ নেশন’কে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকার, যেখানে বালাকোট অভিযানের ব্যাপারে ‘মেঘনাদ তত্ত্ব’ খাড়া করেছিলেন মোদী। তার পর আবার বলেছিলেন, ১৯৮৮ সালে ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ইমেল ব্যবহার করতেন তিনি।
হ্যাঁ, সেই ভিডিও পোস্ট করে প্রতীক সিনহা বলছেন, সাক্ষাৎকারের একটি অংশে, সঞ্চালক দীপক চৌরাসিয়া মোদীকে প্রশ্ন করছেন তিনি সাম্প্রতিক কালে কবিতা লিখেছেন কি না। এই প্রশ্নের পরেই মোদীকে দেখা যাচ্ছে, একটি কাগজের দিকে তাকিয়ে কবিতার ব্যাপারে জবাব দিচ্ছেন তিনি। প্রতীকের দাবি, পাতার ওপরে যে প্রশ্নটি দেখা যাচ্ছে, সেটি ওই সঞ্চালকই করেছেন। শুধু তাই নয়, এ নিয়ে একের পর এক টুইটও করে গেছেন প্রতীক। যা দেখার পর নেটিজেনদের কাছে এটা প্রায় পরিষ্কার যে, পুরো সাক্ষাৎকারটিই ছিল ‘সাজানো’।
উল্লেখ্য, ওই সাক্ষাৎকারে বালাকোট সাফল্যের গাঁথা বলতে গিয়ে মোদী বলে বসেছিলেন, পাকিস্তানি র্যাডার মেঘ-বৃষ্টিতে কাজ করে না। আর তাই বৃষ্টি-ঝঞ্ঝার মধ্যেই বালাকোটে হামলা চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। যার ফলে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের হাতে ট্রোলড হতে হয় তাঁকে। ‘মোদীজি সেনাকে বললেন, আকাশ মেঘে মেঘে ঢাকা। এই সময় পাকিস্তানের র্যাডার ঠিকঠাক কাজ করবে না। যাও, মেঘের আড়ালে লুকিয়ে টুক করে শত্রুপক্ষের সীমানায় ঢুকে বোমাটি ফেলো। আবার মেঘের আড়ালেই ফিরে এসো। একেবারে মেঘনাদের মতো’। এমনই নানা হাস্যরসাত্মক পোস্ট ঘুরে বেড়াচ্ছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার ওপর এবার ওই সাক্ষাৎকারটি ‘সাজানো’ কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যেতেই বিড়ম্বনা বাড়ল মোদীর।