‘বেছে বেছে আধা সামরিক বাহিনী আনা হয়েছে। মালদহ দক্ষিণের বিজেপি প্রার্থীর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত অফিসার। তিনি রাজ্যে বাহিনী মোতায়েন করছেন। কেন্দ্রীয় বাহিনীতে আরএসএসের লোককে ঢুকিয়ে দিয়েছে কিনা সন্দেহ। কেশপুরে গুলি চালিয়েছে। কোথাও লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের বলছে, মোদীজিকে ভোট দাও। পাঁচ জায়গায় হাতেনাতে ধরা হয়েছে। তুমি কে হরিদাস? তুমি আজ আছ মোদীর নিয়ন্ত্রণে? কাল কোথায় যাবে?’ কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে ঠিক এই ভাষাতেই তোপ দেগেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এবার আর সেটা শুধু তৃণমূলের বৃত্তেই আটকে রইল না। এবার সরকারি ভাবেই এর বিরোধীতা করল রাজ্য। এ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব অত্রি ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় বাহিনীর আচরণ নিয়ে কড়া ভাষায় চিঠি লিখলেন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবকে।
গোটা ঘটনার কথা উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে তোপ দেগেছেন স্বরাষ্ট্র সচিব। ষষ্ঠ দফার ভোটে গোপীবল্লভপুর, বিষ্ণুপুর, ময়না, ভগবানপুর এবং সবং-এর কথা উল্লেখ করেছেন চিঠিতে। এর মধ্যে ১২ মে-র ভোটে বেশ কয়েকটি জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালিয়েছিল। ভোটারদের সঙ্গেও কেন্দ্রীয় বাহিনী দুর্ব্যবহার করছেন বলে ওই চিঠিতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র সচিব। ভারতী ঘোষের নিরাপত্তা রক্ষীর অস্ত্র-সহ বুথের ভিতর ঢুকে পড়া এবং হাওড়ার ভোটে বুথের মধ্যে বিদায়ী সাংসদ এবং এ বারের প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফেলে মারার কথাও উল্লিখিত রয়েছে দেড় পাতার ওই চিঠিতে। শুধু ষষ্ঠ দফা নয়। চতুর্থ দফার ভোটে বীরভূমের পাড়ুই এবং দুবরাজপুরের ঘটনার কথাও বিস্তারিত লিখেছেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব।
সেই সঙ্গে অত্রিবাবু ওই চিঠিতে লিখেছেন, কুইক রেসপন্স টিম সঠিক ভাবে কাজ করতে পারছে না। যেখানে গণ্ডগোল হচ্ছে, সেখানে সময় মতো পৌঁছতে পারছে না। কারণ তাঁদের ওই এলাকা সম্পর্কে সম্যক ধারনাই নেই। স্থানীয় পুলিশ আধিকারিকদের ওই টিমে না রাখলে এই ঘটনা থামানো যাবে না বলেও নবান্নের তরফে চিঠিতে লেখা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছেন মমতা। তবে সোমবার নামখানার জনসভা থেকে রাজ্য পুলিশকে তিনি বার্তা দিয়েছেন, ‘কেন্দ্রীয় বাহিনী যেখানে পারছে গুলি চালাচ্ছে। রাজ্যের অফিসাররা কী করছেন? ভয় পাচ্ছেন নাকি? ভয় পাবেন না। আমরা এখনও মরে যাইনি। মনে রাখবেন আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের ব্যাপার। আমাদের কাজ আমরা করব। কেন্দ্রের কাজ কেন্দ্র করবে।”