নির্বাচনী প্রচারে বেরানোর পাশাপাশি মনোনয়ন পেশের দিনও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা আত্মসাতে অভিযুক্ত নেতা বিকাশ সিংহকে সঙ্গে রাখায় বিজেপি প্রার্থী সায়ন্তন বসুর ওপর প্রথম থেকেই চটে ছিলেন বিজেপি কর্মীরা। যা নিয়ে চরমে উঠেছিল দলের গোষ্ঠীকোন্দল। আর এবার তা-ই আরও প্রকাশ্যে চলে এল। সায়ন্তনকে জব্দ করতে ইতিমধ্যেই সম্মুখ সমরে নেমে পড়েছেন বিজেপির জেলা সম্পাদক অমিয় সরকার। বসিরহাট কেন্দ্র থেকেই হিরে(ডায়মন্ড) প্রতীকে নির্দল হিসেবে লড়ছেন তিনি। আর শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও দীনদয়াল উপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে তাঁকেই সমর্থন করছে জনসঙ্ঘ।
প্রসঙ্গত, অমিয় সরকারের বাড়ি হিঙ্গলগঞ্জের বাঁকড়ায়। তিনি বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ৫১ বছরের অমিয় বলেন, ‘১৯৮৮ সাল থেকে আমি বিজেপির সদস্য। বহুদিন ধরে আপদে-বিপদে দলের পাশে থেকেছি। কিন্তু দল আমাদের কথার কোনও দাম দেয়নি। দিয়েছে সায়ন্তন বসুকে।’ প্রথম দিকে অমিয়র প্রার্থী হওয়া নিয়ে তেমন মাথাব্যথা ছিল না বিজেপির। কিন্তু ভোটের এক সপ্তাহ আগেই মোক্ষম চাল চেলে দিয়েছেন অমিয় অনুগামীরা। সারা বসিরহাট জুড়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও দীনদয়াল উপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে পোস্টার, ফ্লেক্স দিয়েছেন। তাতে লেখা জনসঙ্ঘ সমর্থিত নির্দল প্রার্থী অমিয় সরকার। এতেই বিপাকে পড়েছে গেরুয়া শিবির।
অন্যদিকে, বিজেপির প্রাক্তন বসিরহাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি হাজারিলাল সরকারও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখন দলে আমাদের কোনও গুরুত্ব নেই। কোনও কর্মসূচীতেই আমাদের ডাকা হচ্ছে না। এখন দলে নতুন নতুন নেতাদের দেখছি। তাঁদের অধিকাংশই বাইরে থেকে এসেছেন। তাঁরা বসিরহাটের মানুষের মনের কথা, সমস্যার কথা, অভাব-অভিযোগের কথা জানেন না।’ আর জনসঙ্ঘর রাজ্য সভাপতি রাজকুমার মিশ্র বলেন, ‘বাইরে থেকে সায়ন্তন বসুকে এনে প্রার্থী করা হয়েছে। তাই তাঁকে প্রার্থী হিসেবে মানতে পারছে না বিজেপির একটা বড় অংশ। অমিয় সরকার অনেক পুরনো বিজেপি কর্মী। তিনি দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। নির্দল প্রার্থী হিসেবে আমরা তাঁকে সমর্থন করছি।’
জনসঙ্ঘর রাজ্য সভাপতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও তুলোধনা করতে ছাড়েননি। তাঁর অভিযোগ, ২০১৪-র আগে মোদী বলেছিলেন, শ্যামাপ্রসাদের স্বপ্নের ভারতবর্ষ গড়বেন। এখন আর সে কথা মুখেও আনেন না তিনি। হিন্দুদের মধ্যেও তিনি বিভাজন এনেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এমন মন্তব্যে মুখ পুড়েছে গোটা গেরুয়া শিবিরের। একে তো অমিয়র নির্দল প্রার্থী হওয়া, আর দ্বিতীয়ত জনসঙ্ঘর তরফে এমন অভিযোগ, এই দুইয়ের সাঁড়াশি চাপে বেজায় বিপাকে বিজেপি।