একেবারে বিয়ের সাজ! সোনালি শেরওয়ানি, মাথায় পাগড়ি, গলায় গোলাপের মালা- পুরোদস্তুর বর সেজে ঘোড়ায় চড়ে বিয়ে করতে চলেছেন অজয় বারোত। বরের সঙ্গে নাচতে নাচতে বরযাত্রীও গেল। কিন্তু কনে নেই। কনে ছাড়াই বিয়ে হয়ে গেল অজয়ের। শুনতে অদ্ভুত লাগলেও সত্যি।
গুজরাটের হিম্মতনগরের বাসিন্দা অজয় তাঁর গ্রামের কারোর বিয়ে হলেই পৌঁছে যান। নিমন্ত্রণের ধার ধারেন না। সেখানে গিয়ে কনে বা বর পক্ষের হয়েই উদুম নেচে আসেন। তার পর বাড়ি ফেরেন বিষন্ন মুখে। অজয়ের সেই প্রশ্ন ‘বাবা আমার কি বিয়ে হবে না!’ আর এই প্রশ্নের কোনো উত্তর থাকে না অজয়ের বাবা বিষ্ণু বারোতের কাছে। কারণ তিনি জানেন যে ছেলের কোনওদিন বিয়ে হবে না। বিরল রোগে আক্রান্ত সে। ছেলের বিয়ে দিয়ে আরও একটি মানুষের জীবন নষ্ট করতে চান না তিনি।
কিন্ত ছেলে যে বুঝতে চায় না। করুণ মুখে বারবার বিয়ের আবদার থাকে বাবার কাছে। নিরুপায় হয়ে ছেলের মন রাখতেই বিয়ের অনুষ্ঠান করলেন বিষ্ণু। গুজরাটি আচার-অনুষ্ঠান মেনেই তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের এক দিন আগে সংগীত ও মেহেন্দি অনুষ্ঠানও হয়। কমপক্ষে ৮০০ অতিথি আমন্ত্রিত ছিলেন। শুধু কনে ছিল না। বিষ্ণু বারোতের কথায় ‘বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল ছেলের। তার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি এতেই আমরা খুশি। ওর জন্য মেয়ের জোগাড় করতে পারিনি ঠিকই, কিন্তু বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানে কোনও ত্রুটি রাখিনি।’ অজয়ের কাকা কমলেশ বলেন, ‘ও ভীষণ নাচতে ভালবাসে। ফেব্রুয়ারি মাসে ওর দাদার বিয়েতে দারুণ নেচেছিল। সবাই মুগ্ধ ওর নাচ দেখে।’ একই কথা শোনা যায় অজয়ের বোনের গলাতেও।
দিন সত্যিই অজয়ের মন খারাপ ছিল না। গুজরাটি গানে তাঁর তখন পাগল পাগল নাচ। কনে নেই তো কী হয়েছে, এমন একটি মুহূর্তই তো সে চেয়েছিল! আজ থেকে সে বিবাহিত পুরুষ, বুক ঠুকে বলতেই পারেন অজয়।