‘এবারের ভোট অনেকে একটু আলাদা করে দেখছে। এ বারের নির্বাচন যেন ফ্যাসিবাদকে আটকানোর নির্বাচন। ফ্যাসিবাদের জাল গত কয়েক বছরে দেশে ছড়িয়েছে। পাল্লা দিয়ে বিভাজন, হিংসার রাজনীতি উঁকি মারছে। বুঝতে অসুবিধে হয় না, এ বার অনেকেই অন্তত বিজেপিকে সরানোর তাগিদটা অনুভব করছেন।’ বললেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের ছাত্র শ্রমণ গুহ। হ্যাঁ, যাদবপুরের ‘তর্কপ্রিয়’ ছাত্ররাও এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুরে বলছেন, এবারের নির্বাচন অন্যবারের তুলনায় আলাদা।
বাংলার ছাত্রী কাজরি মজুমদারও বিজেপির সমালোচনায় মুখর। তাঁর কথায়, এখন লড়াই-সংগ্রামের পথেও সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে উঠেছে বিজেপি। সংসদীয় গণতন্ত্র মানুষকে যে ছিটেফোঁটা সুবিধেটুকু দিয়েছে, এই বিজেপি সেইটুকুও কেড়ে নিতে চায়। এরপরেই কাজরি জানান, আমি ৩৪ বছরের সিপিএমের ভয়াবহতা অনুভব করেছি। এমার্জেন্সি বা তার পরে কংগ্রেসের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের বহু কাহিনী শুনেছি। আর বিজেপিকে তো শেষ পাঁচ বছর ধরে দেখছিই। তাঁর দাবি, মানুষ খুনের রক্তে লাল অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই। আমাদের ক্যাম্পাসেই সিপিএম আমাদের মেরেছে। আমরা এক হয়ে প্রতিরোধ করেছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ফারুক আবদুল্লা আবার সাফ জানিয়ে দেন, ‘বিকল্প নিয়ে ভাবার কিছু নেই। রাজ্যে বিজেপিকে আটকানোর ক্ষমতা একমাত্র তৃণমূলের রয়েছে। অন্যদের সে ক্ষমতাও নেই, আমার তো মনে হয় ইচ্ছেও নেই।’ এ কথার রেশ ধরেই বিশ্বরূপ বলেন, ‘৩৪ বছরে চুনি কোটালের ঘটনা ঘটেছে। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম, লালগড় তো ঘটেছে। আর কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজসাথী, সমব্যাথী— মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যু সব কিছুতেই পাশে রয়েছে রাজ্যের তৃণমূল সরকার। ৩৪ বছরে ছিল?’
ফারুকও বলেন, ‘এই সব প্রকল্প হয়তো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পড়ুয়ারই প্রয়োজন নেই। কিন্তু সারা দেশে কেন্দ্র যখন নন নেট গবেষকদের মাসিক ভাতা বন্ধ করে দিল, তখন কিন্তু আমরা আবেদন করেছিলাম বলেই এককথায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ থেকে মাসে আট হাজার টাকা করে ফেলোশিপ ঘোষণা করেন। এর পরেও কি বলা চলে বিজেপির বিকল্প তৃণমূল নয়?’ বিজেপির নাম শুনেই ফের জ্বলে উঠলেন শ্রমণ। তাঁর কথায়, ‘রাজা আসবে যাবে। কিন্তু দিন বদলাবে না। এ কথা তো কবিতাতেই বলা আছে। আমি শুধু মনে করিয়ে দেব, কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পর থেকে টার্গেট কিন্তু দিল্লীতে জেএনইউ আর কলকাতায় যাদবপুর।’