গতকাল ছিল ষষ্ঠ দফার নির্বাচন। সকাল থেকেই আসরে ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ। তৃণমূলের মহিলা ব্রিগেডের সঙ্গে রীতিমতো মারামারিতে জড়ালেন বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ। শুধু তাই নয়, কেশপুরের দোগাছিয়া গ্রামে ভারতী ঘোষের নিরাপত্তা রক্ষীর গুলিতে আহত হয়েছেন তৃণমূল কর্মী বক্তিয়ার খাঁ। সেই খবর পেয়েই তাঁর বাড়িতে হাজির হলেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব।
কালো টিনের এক চালা ঘরের সামনের উঠোনে দাঁড়াল সেই এসইউভি। গাড়ি দেখে কান্নার রোল হল দ্বিগুণ। রবিবার ঘাটালে ষষ্ঠ দফা লোকসভা নির্বাচনে গুলিবিদ্ধ বক্তিয়ার খানের স্বজনেরা ঘিরে ধরল এই কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ তথা এবারের তৃণমূল প্রার্থী দীপক অধিকারীকে (দেব)। বক্তিয়ারের বছর তেরোর একমাত্র পুত্র বলল, “বাবাকে গুলি করেছে। কাকু, ওরা এ রকম করল কেন?”
দেবকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকেন বক্তিয়ারের দাদা আলমগির। তিনি সন্ত্বনা দেন। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বক্তিয়ারের স্ত্রী খাদিজা বেগম তখন বাড়িতে ছিলেন না। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আহত স্বামীর পাশে ছিলেন।মিনিট কয়েক বক্তিয়ারের গোটা পরিবারকে কখনও বুকে জড়িয়ে ধরে, কখনও তার বাচ্চাদের মাথায় হাত বুলিয়ে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেন অভিনেতা দেব। সময় বয়ে যাচ্ছে দেখে স্থানীয় বিধায়কের ডাক শুনে ঘুরে দাঁড়িয়ে দেব এর পর বলেন, “ভোট অনেক হবে। এই পরিবারটাকে এ ভাবে ফেলে যেতে পারবো না।”
মজে যাওয়া শিলাবতী নদীর ধারের আস্তানা থেকে এ দিন সকাল দশটা নাগাদ দেব যখন ভোট দেখতে বেরোচ্ছেন, তত ক্ষণে কার্যত হুলস্থূল বাধিয়ে দিয়েছেন তাঁর প্রতিপক্ষ বিজেপির ভারতী ঘোষ। এ প্রসঙ্গে দেব বলেন, , “ভারতীদি তো নিজেই এক সময়ে আইনের রক্ষক ছিলেন। এখন সেই মানুষ আইন ভাঙছেন? প্রতিটা মানুষের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, সব পার্টিকেই বলছি, ভোটটা শান্তিপূর্ণ ভাবে হতে দিন।”
দেব সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই সন্ত্রাসের পরিবেশ চাই না। মানুষ যেন শান্তিতে ভোট দিতে পারেন। যা হয়েছে খুব দুঃখজনক। আমি এই রাজনীতি চাই না। এভাবে মানুষের ভোট পাওয়া যায় না। ভালবাসা দিয়ে মানুষের ভোট পাওয়া যায়। আমি এই পরিবারের পাশে রয়েছি। আমার দল রয়েছে। যিনিই এই ঘটনা ঘটাক তঁার ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ ভারতী ঘোষ সম্পর্কে বলেন, ‘উনি নির্বাচনী কোনও বিধিনিষেধ মানছেন না। গাড়ির অনুমতি নেই। বুথে ঢুকে ভয় দেখাচ্ছেন। একসঙ্গে অনেক গাড়ির কনভয় নিয়ে ঘুরছেন। এতে সুষ্ঠু ভোটের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ভোটের আগের দিন রাতে ঘাটালে শাড়ি, টাকা বিলি করছিলেন। এর আগে পিংলায় টাকা বিলি করতে গিয়ে ধরা পড়েন। বাংলার সংস্কৃতিকেই উনি নষ্ট করছেন।